আপাসেন কেয়ার কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

আপাসেন কমিউনিটির দুর্বল মানুষের জন্য বৈষম্যহীন সামাজিক সেবা নিশ্চিত করেছে – রুশনারা আলী এমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সামাজিক সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আপাসেন কমিউনিটির দুর্বল মানুষের জন্য বৈষম্যহীন সামাজিক সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে, যা ব্রিটিশ ওয়েলফেয়ার সিস্টেমের গর্বিত ঐতিহ্যেরই অংশ। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত আপাসেন-এর কেয়ার কনফারেন্স ও বার্ষিক ডিনারে এমন মন্তব্য করেছেন লেবার দলীয় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রোশনারা আলী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পূর্ব লন্ডনের অট্রিয়ম ব্যাঙ্কুইটিং হলে অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্স ও ডিনারে রাজনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী এবং আপাসেন কেয়ার ওয়ার্কার ও সেবাগ্রহীতাসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। বিবিসি এশিয়ান নেটওয়ার্কের প্রেজেন্টার নাদিয়া আলীর উপস্থাপনায় আয়োজিত কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আপাসেন চেয়ারম্যান আমির হোসেন। সংস্থাটির চীফ এক্সিকিউটিভ মাহমুদ হাসান এমবিই প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘ ইতিহাস ও চলমান কর্মকান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন কনফারেন্সে। আপাসেন প্রকাশনা ‘এ ব্রিফ গাইড টু হেলথ এন্ড সোস্যাল কেয়ার’-এবং বাংলাদেশসহ ব্রিটেনের বাইরে সংস্থাটির কর্মকান্ডের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন তিনি তাঁর বক্তৃতায়। কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন টাওয়ার হ্যামলেটস-এর নির্বাহী মেয়র জন বিগস, গ্রেটার লন্ডন এসেম্বলীর সদস্য উমেশ দেশাই, আপাসেন ইন্টারন্যাশনালের ট্রাষ্টি অধ্যাপক সেডরিক বেল, ইউকে হোম কেয়ার এসোসিয়েশনের মার্কেটিং ডাইরেক্টর এন্ড্রু হেফারম্যান, আপাসেন হোম এন্ড কমিউনিটি সার্ভিস প্রধান শোয়েব আহমেদ, কেয়ার ডেভোলাপমেন্ট ম্যানেজার হাবিবুর রহমান কবির ও রেসিডেন্সিয়াল রেসপাইট কেয়ারের রেজিষ্ট্রার্ড ম্যানেজার পামেলা বনি প্রমূখ।

এমপি রোশনারা আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন, আপাসেন-এর সেবা কমিউনিটির শারিরীক ও মানষিকভাবে দুর্বল মানুষগুলোর আত্মবিশ্বাস ঠিকিয়ে রাখছে, সমাজে বৈষম্যহীন কমিউনিটি চেতনায় শান দিচ্ছে অব্যাহতভাবে, এটি ব্রিটিশ ওয়েলফেয়ার সিস্টেমের গর্বিত ঐতিহ্যেরই অংশ। নিজ এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটসে এমন একটি সেবা সংস্থার মূল ভিত্তি হওয়ায় নিজের গর্বিত অনুভূতির কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্রিটিশ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এই ঐতিহ্য ঠিকিয়ে রেখে তা আরও সমৃদ্ধ করতে টাওয়ার হ্যামলেটসের স্থানীয় প্রশাসন, পার্লামেন্ট সদস্য, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট সংকোচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিরোধী দলীয় এমপি রোশনারা বলেন, সামাজিক সেবা খাতে বাজেট সংকোচনের যেকোন উদ্যোগ কমিউনিটির দুর্বল অংশের মধ্যে বৈষম্য আতঙ্ক সৃষ্টি করবে, এটি বুঝতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি আপাসেন-এর ভবিষ্যত সাফল্যও দেখতে চান এমন প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন তাঁর বক্তৃতায়।
মেয়র জন বিগস আপাসেন-এর সাথে কাউন্সিলের সহযোগীতা সম্পর্ক অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে তাঁর বক্তৃতায় বলেন, বৈষম্যহীন সেবা পাওয়ার অধিকার সবার, এই অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে আপাসেন। আপাসেন-এর সেবা প্রদানের দীর্ঘ পথচলায় টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল পাশে ছিলো, ভবিষ্যতেও থাকবে এমন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট সংকোচন মোকাবিলা করেই কাউন্সিল সেবা খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে। আপাসেন-এর দীর্ঘকালীন ৩জন কেয়ার ওয়ার্কার ও একজন ভলান্টিয়ারকে সম্মাননা জানানো হয় কনফারেন্সে।
কনফারেন্সের শেষ পর্বে প্রশ্নোত্তর সেশনে সামাজিক সেবা বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন রোশনারা আলী এমপি, মেয়র জন বিগস, মাহমুদ হাসান এমবিই ও ইউকে হোম কেয়ার এসোসিয়েশনের মার্কেটিং ডাইরেক্টর এন্ড্রু হেফারম্যান প্রমূখ। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় কেয়ার কনফারেন্স ২০১৮।
উল্লেখ্য, ইষ্ট লন্ডনে সামাজিক ও কমিউনিটি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত আপাসেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সেবার পরিধি লন্ডনের অন্যান্য বারা ও বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বিস্তৃত করে। সংস্থাটির সেবা সরবরাহের দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও কেয়ার কনফারেন্স ও বার্ষিক ডিনার এবারই প্রথম।

Advertisement