আক্রান্ত হওয়া ও কোয়ারেন্টিনে থাকার অভিজ্ঞতা জানালেন ইসরায়েলি থেরাপিস্ট

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : ইসরায়েলি থেরাপিস্ট মেরেল জ্যাকব। সম্প্রতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে আছেন তিনি। করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকে বর্তমান পর্যন্ত পুরো পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন তিনি।

জ্যাকব বলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে আমার মায়ের হাঁটুর সার্জারির জন্য লং আইল্যান্ডে গিয়েছিলাম। আমি যখন যুক্তরাষ্ট্রে যাই, ওই সময় আমার হালকা ঠান্ডা লেগেছিল। সেই সঙ্গে কাশি হচ্ছিল এবং নাক দিয়ে পানি ঝরছিল। তবে তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম না।

তিনি আরো বলেন, আমি বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতে কাটিয়েছি। মায়ের এক বান্ধবীর স্বামী মারা গেছে, ওই নারীকে আমাদের বাসায় ডাকা হয়েছিল। এরপর বাড়ি ফিরে আসার সময় আমার ঘুম পাচ্ছিল। ইসরায়েলে যখন ফিরে আসি, তখন খুব মাথা ব্যথা করছিল। খুভ ঘুমের প্রয়োজন বোধ করছিলাম।

তিনি আরো বলেন, ইসরায়েলে ফিরে আসার পর আমাকে কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়নি। তবে আমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়াটাই ভালো ছিল।

পরদিন সকালেও আমার কাশি ছিল এবং তা আরো বেড়ে যায়। আমার স্বামী আমাকে করোনা পরীক্ষার কথা বলেন। জ্বর না থাকলেও আমি পরীক্ষা করাতে যাই।

কারণ, আমি একজন স্পিচ থ্যারাপিস্ট। বাচ্চাদের সঙ্গে আমি কাজ করি। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, এরকম অনেকের সঙ্গেই আমাকে কাজ করতে হয়। সে কারণে আমি করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এরপর আমি ইসরায়েলি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস মাজেন ডেভিড আদম ডেকে পাঠাই। এরপর আমার লক্ষণগুলো বলি। এরপর তারা একজন চিকিৎসককে ডেকে পাঠায়। কয়েক ঘণ্টা পর ডাক্তার আমাকে জানান, মাত্র সাত মিনিট লাগবে পৌঁছাতে। এরপর তিনি আমার কফ ও থুথুর নমুনা নিলেন।

পরদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমার কাছে ফোন এল। এরপর তারা জানাল, আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছি। আমি কোনোভাবেই এটি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ওই সময় বলে উঠি, আপনি কী বলছেন?

আমাকে বলা হয়, জেরুসালেমের হাদাশা মেডিকেল অর্গানাইজেশনের ইন কেরেম ক্যাম্পাসে ভর্তি রাখা হতে পারে। পরে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে আসি। এখানে সাতদিন ধরে আছি। ইসরায়েলে প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিও এখানে আছে। ডাক্তার এবং নার্সরা এখানে আমাদের যত্ন নেয়। সচরাচর প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের সঙ্গে ডাক্তাররা যোগাযোগের করছেন এবং আমাদের গতিবিধি সিসি ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারি করছেন।

তিনি আরো বলেন, বাবা-মার ব্যাপারে এখন আমার ভয়টা বেশি। আমার মায়ের কফ পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এখনো ফল পাওয়া যায়নি। আর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বাবার যেহেতু কাশি হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার দরকার নেই।

Advertisement