আফগানিস্তানে ‘সত্যিকারের’ ইসলামি শাসন চায় তালেবান

আফগানিস্তানে শান্তি আলোচনার ব্যাপারে এরই মধ্যে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে তালিবান। একই সঙ্গে দলটি বলেছে, তারা আফগানিস্তানে প্রকৃত ইসলামি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেখানে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় বিধানের আলোকে নারীদেরকে তাদের প্রাপ্য অধিকার দেওয়া হবে।কাতারে আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালিবান নেতাদের আলোচনা বেশ ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। অন্য দিকে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের আগে দেশজুড়ে সহিংসতা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই রবিবার (২০ জুন) তালিবানের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি এলো।আফগান কর্মকর্তারা এরই মধ্যে বিদ্যমান আলোচনা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, তালিবান এখনো লিখিত কোনো শান্তি প্রস্তাব জমা দেয়নি, যা মূল আলোচনার সূচনা পয়েন্ট হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

কাতারে তালিবানের রাজনৈতিক অফিসের প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার। বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, আমরা এটা অনুধাবন করছি যে, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া সিস্টেমটির ধরন সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আফগানদেরও প্রশ্ন রয়েছে। কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত সিরিজ বৈঠকে এসব ব্যাপারে তালিবান খুব স্পষ্টভাবে তার অবস্থান তুলে ধরেছে।মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার বলেন, আফগানিস্তান সংক্রান্ত যাবতীয় ইস্যুর সর্বোত্তম সমাধান হলো একটি ‘প্রকৃত ইসলামি ব্যবস্থা। আলোচনায় আমাদের অংশগ্রহণ এবং সেখানে আমাদের পক্ষে যে সমর্থন এসেছে সেটি স্পষ্টতই এই ইঙ্গিত দেয় যে আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বিশ্বাসী।এ দিকে ১১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা চলে যাওয়ার পর কাবুলের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়া কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে।

অন্য দিকে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে তুরস্ক। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রেরও সায় আছে বলে জানা গেছে। যদিও অপর বিবৃতিতে তালিবান তুরস্কের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার ‘কোনো আশা’ রাখা উচিত নয়। দূতাবাস ও বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদেরই দায়িত্ব।তালিবানের বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানের প্রতি ইঞ্চি ভূখণ্ড, এর বিমানবন্দর, বিদেশি দূতাবাস এবং কূটনৈতিক অফিসগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদের দায়িত্ব। ফলে আমাদের দেশে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার আশা কারও পোষণ করা উচিত নয়। যদি কেউ এ জাতীয় ভুল করে থাকে তবে আফগান জনগণ এবং ইসলামি আমিরাত তাদের দখলদার হিসেবে বিবেচনা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।সূত্র : রয়টার্স

Advertisement