হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :: লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ও দেশের প্রখ্যাত আলেম হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর আল্লামা হাফেজ তাফাজ্জুল হক মুহাদ্দিসে হবিগঞ্জীর জানাজার নামাজ শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে । তার নিজ প্রতিষ্ঠিত হবিগঞ্জের উমেদনগরে জামেয়া আরাবিয়া উমেদনগর টাইটেল মাদ্রাসা ময়দানে সোমবার সকাল ১০ টায় অনুষ্টিত হয় ।
আল্লামা হবিগঞ্জীর জানাজায়র অংশ নিতে জনস্রোতে পরিণত হয় হবিগঞ্জের উমেদনগর মাদরাসা মাঠ । জানাজায় স্থানীয় আলেমরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছুটে আসেন হাজারো আলেম ও ছাত্র-জনতা ।
জানা যায়, জানাযার ইমামতি করেন হযরতের বড় পুত্র হাফিজ মাওলানা মছরুরুল হক। পরে তাকে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মসজিদের পাশে মাদ্রাসার ফুল বাগানের শায়িত করা হয়। জানাজায় অংশ নিতে তার প্রিয় ছাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর আলামা নুর হোসাইন ক্বাসেমী ও মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন- সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি আলামা শায়খ আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ি, মহাসচিব আলামা নুর হোসাইন ক্বাসেমী, আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশ (ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের) সভাপতি আলামা শায়খ জিয়া উদ্দিন অসুস্থ থাকার কারনে তার পক্ষে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন সিলেট জেলা জমিয়তের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা নজরুল ইসলাম, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা উবায়দুলাহ ফারুক, সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ, জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বিবারিয়া, আলামা নুর ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক পীর সাহেব বরুণা, মাওলানা শায়খ আব্দুশ শহীদ গলমুকাপনী, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা নাজমুল হাসান, প্রিন্সিপাল মাওলানা শোয়াইব আহমদ, হবিগঞ্জ জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, রেঙ্গা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বোরহান, আযাদ দ্বীনি এদ্বারায় বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শায়খ আব্দুল বছির, সিলেট মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ইউকে জমিয়তের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শোয়াইব, শায়খ খলিলুর রহমান হামিদী পীর সাহেব বরুণা, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা মখলিছুর রহমান, সিলেটের গহরপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু, পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মরহুমের ৩য় ছেলে যুব জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজ মাওলানা তাহফীমূল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, সাধারণ সম্পাদক মুফতি ফয়জুলাহ, ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি আবুল হাসনাত আমিনীসহ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জমিয়ত, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোটসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
জানাজায় মরহুমের স্মৃতিচারণ করে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বক্তারা বলেন, আলামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর মৃত্যুতে জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূর্ণ হবার নয়। বক্তারা বলেন, আমরা এক মূল্যবান রাহবার ও ছায়াস্থলকে হারালাম। দেশ, জাতি ও উম্মাহর যেকোন দুর্দিনে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও পথনির্দেশনা ছিল আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ।
বক্তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য : রবিবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে হবিগঞ্জ থেকে সিলেটে হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মৃত্যুবরণ করেন মাওলানা তাফাজ্জুল হক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি ৫ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাফাজ্জুল হক দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন।