আসুন মানবিক হই,প্রার্থনা করি সারাবিশ্বের জন্য

:মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম:

নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মানবজাতি এখন দিশেহারা। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক ত্রাস হয়ে উঠেছে এটি।মানুষের সভ্যতা ও অগ্রগতি চ্যালেঞ্জের মুখে। একের পর এক দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশকেও বলা হয়েছিল উচ্চ ঝুঁকির দেশ।

বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকে প্রতিদিনই আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পত্রিকার খবরে দেখা যায় অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। সবচেয়ে হতাশার বিষয় হল এরই মধ্যে ডাক্তার, নার্সসহ চিকিৎসা সেবার সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। আইন- শৃঙ্খলা রক্ষার সাথে জড়িতরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্যখাতে অস্থিরতার পাশাপাশি সকল ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা পরিস্থিতিকে আরো টালমাটাল করে তুলেছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে আজ আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে হতাশা আর আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনাহার, অর্ধাহার, অব্যবস্থাপনা,ত্রাণের চাল চুরি,ক্ষুধার্ত মানুষের বিক্ষোভ সবকিছু মিলিয়ে অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে বাংলাদেশ।
তবে সরকারের অপ্রতুল ত্রাণের পাশাপাশি কিছু ব্যক্তি ও সংগঠণ, বিশেষ করে প্রবাসীদের মানবিক কর্মকাণ্ড কিছুটা হলেও আশা জাগায়।
এই মহামারী থেকে মানবজাতি কবে রক্ষা পাবে তা কেউই বলতে পারছেন না। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তবে এই সংকটকালে মানবিক জীব হিসেবে আমাদেরও যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। এখনো আমরা সতর্কতা অবলম্বন এবং সচেতনতার পরিচয় দিতে পারিনি। প্রাত্যহিক জীবনে কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে এবং শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে চললে আমরা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে ভূমিকা রাখতে পারি। এতে করে নিজে নিরাপদ থাকবো, অন্যকেও নিরাপদ রাখতে পারবো।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা শনাক্তকরণে ‘টেস্ট’ জরুরি। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের টেস্টিং ব্যবস্থা খুব ধীরগতিতে চলছে। যত দ্রুত টেস্ট করে রোগী শনাক্ত করা যাবে ততই সামাজিক সংক্রমণ রোধে সহায়ক হবে। তাই সরকারকে আরো দ্রুত গতিতে,বেশি সংখ্যক টেস্ট করা উচিত। পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষগুলোকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা দিতে এবং এক্ষেত্রে সৃষ্ট নৈরাজ্য বন্ধে আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে,কঠোর হতে হবে।

সকল সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠণের নেতৃবৃন্ধ এবং সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসলে এই সংকট উত্তরণে কিছুটা হলেও সহায়ক হবে।
এধরণের দুর্যোগ মানুষের ভেতরের মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তোলার সুযোগ করে দেয়। মানবসেবার মাধ্যমেই আমরা সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারি।
আসুন আমরা মানবিক হই। প্রার্থনা করি আমাদের মাতৃভূমি এবং সারাবিশ্বের জন্য।

অনিশ্চয়তা, বিপদ,হতাশা, আতঙ্কমুক্ত হোক মানবজাতি। দূর হোক অকল্যাণ। প্রতিটি জানপদে ফিরে আসুক শুভ,সুন্দর, স্বাভাবিক জীবন।
লেখকঃ মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম সংগঠক ও সমাজ কর্মী 

Advertisement