চলতি বছর ছুরিকাঘাতে নিহত ১০ কিশোর
ব্রিটবাংলা ডেস্ক : ইংল্যান্ডের ভয়াবহ নাইফ ক্রাইম প্রতিরোধ নিয়ে পার্লামেন্টে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরিসা মে। এদিকে পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে হোম সেক্রেটারী এবং চ্যান্সেলারের মধ্যে।
এদিকে নাইফ ক্রাইম নিয়ে বুধবার সকালে পার্লামেন্টে উত্তপ্ত আলোচনা এবং বিকেলে হোম অফিসে পুলিশ প্রধান ও হোম সেক্রেটারীর আলোচনার ফাঁকেই ইস্ট লন্ডনের লেইটনে ২০ বছর বয়সী আরেক কিশোর প্রাণ হারিয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটায় তাকে ছুরিকাহত অবস্থায় উদ্ধারের ৫টা ১০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করে সে। এ নিয়ে চলতি বছর লন্ডনে একুশ ছুঁয়েছে ছুরিকাঘাতে নিহতের সংখ্যা।
নাইফ ক্রাইমের ভয়াবহতা আশঙ্কাজনকহারে ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডনের বাইরে ইংল্যান্ডের অন্যান্য শহরেও। বার্মিংহ্যামে ১২ দিনের ভেতরে খুন হয়েছে তিন জন। ম্যানচেষ্টার, লিডসেও খুন হয়েছে। চলতি বছরের নিহতদের মধ্যে ১০জনই কিশোর। এর মধ্যে অর্ধেকই নিহত হয়েছে লন্ডনে। লন্ডনে ৯ দিনের ঘটেছে ৬ খুন।
নাইফ ক্রাইম নিয়ে অন্যান্য খবর
https://britbangla24.com/news/72250
https://britbangla24.com/news/72473
https://britbangla24.com/news/72596
আশঙ্কাজনক এই নাইফ ক্রাইম নিয়ে বুধবার পার্লামেন্টে লেবার লিডার জেরেমি করবিনের প্রশ্নবানে নাস্তানাবুধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরিজা মে। ২০১০ সালে টোরি ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাজেট কাট এবং পুলিশ কাটের ফলেই ক্রমান্বয়ে নাইফ ক্রাইম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক সমালোচনা করেন লেবার লিডার। যদিও প্রধানমন্ত্রী এর জবাবে পাল্টা সাবেক লেবার সরকারকেই দোষারূপ করার চেষ্টা করেছেন। তবে পুলিশ কাটের কথা এড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বরং স্কুলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের ন্যাশনাল পুলিশের চীফ কনস্টেবলের সঙ্গে বুধবার হোম অফিসে বৈঠক করেছেন হোম সেক্রেটারী সাজিদ জাভিদ। বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে চলতি সপ্তাহের ভেতরে নাইফ ক্রাইম প্রতিরোধের জন্যে অতিরিক্ত অন্তত ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দের পাশাপাশি পুলিশে আরো লোকবল বাড়ানোর দাবী জানানো হয়েছে। বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্যই বিবেচনা করা হবে বলে কথাও দিয়েছেন হোম সেক্রেটারী। তবে এতে ভিন্নমত পোষণ করেছেন চ্যান্সেলার ফিলিপ হ্যামন। বৃহস্পতিবার তিনি পাবলিকলি জানিয়ে দিয়েছেন যে, পুলিশকে নতুন করে আর কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া যাবে না। এর আগে গত সোমবার তিনি কেবিনেট মিটিংয়ে এই মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার হোম সেক্রেটারীর আশ্বাসের পর বৃহস্পতিবার একটি টিভি ইন্টারভিউতে পুরোপুরি হোম সেক্রেটারীর বিপরীতে কথা বলেন তিনি।
চ্যান্সেলার জানিয়েছেন, সরকার এরিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে আগামী অর্থ বছরে পুলিশকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন পাউন্ড অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেই অর্থ থেকেই নাইফ ক্রাইম প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর ভেতরে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়েছেন তিনি।
২০১০ সাল থেকে টোরি ক্ষমতায় আসার পর ইংল্যান্ডে ২১ হাজারের বেশি পুলিশ অফিসার কমানো হয়েছে। স্ট্রীটে পুলিশের উপস্থিতি কমে যাওয়ার ফলে নাইফ ক্রাইমসহ বিভিন্ন অপরাধের মাত্রা আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। গত বছর শুধু লন্ডনেই নাইফ ক্রাইম বা ছুরিকাঘাত এবং গুলিতে ১৩২ জন নিহত হন। আর চলতি বছর এ পর্যন্ত লন্ডনে ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছে ২১ জন। আর বামিংহ্যামে ১২ দিনের ভেতরে খুন হয় তিন জন। নিহতদের মধ্যে ১০জনই কিশোর।