উদ্বোধন হলো করোনা চিকিৎসায় দেশের সর্ববৃহৎ বসুন্ধরার হাসপাতাল

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গড়ে তোলা হাসপাতালের উদ্বোধন হলো আজ। সকালে ফিতা কেটে এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। এ উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক ও টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সিইও নঈম নিজাম, ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী এবং কালের কণ্ঠ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা চিকিৎসায় দেশের সর্ববৃহৎ এই অস্থায়ী হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু করে বসুন্ধরা গ্রুপ। সরকারের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার আনুষ্ঠানিকতাই শুধু বাকি ছিল। কিছুটা দেরিতে হলেও আজ চালু হলো হাসপাতালটি।

এ মাসের প্রথম সপ্তাহেই আইসিসিবি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন জানিয়েছিলেন, হাসপাতালটি পুরোপুরি প্রস্তুত। সরকার চাইলে যেকোনো সময় এটি ব্যবহার করতে পারবে। আইসিইউ রোগীদের জন্য অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের কাজ শেষ। শুরু হয়েছে জনবল নিয়োগপ্রক্রিয়া। অল্প সময়ের মধ্যেই উদ্বোধন করা হবে। এরই মধ্যে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরিচালক, উপপরিচালক, নার্সসহ অন্যান্য যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাঁরা অস্থায়ী হাসপাতালের পাশে একটি ভবনে দাপ্তরিক কাজ করছেন।

ওই সময় সরকারের নিয়োগকৃত হাসপাতালের পরিচালক ডা. এহসানুল হক বলেছিলেন, সরকার থেকে উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করার অপেক্ষায় রয়েছি।

গত ৬ মে সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, অস্থায়ী হাসপাতালটির সব ধরনের নির্মাণকাজ শেষ। রোগীদের বেডসহ আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বসানো, এসির সংযোগ, বাথরুম, চিকিৎসকদের জন্য আলাদা কক্ষও প্রস্তুত। দাপ্তরিক কাজ চালানোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও আলাদা জায়গা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৪ মে আইসিসিবিতে নির্মিত করোনা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, আজই (৪ মে) চালু হওয়ার কথা। হাসপাতাল চালুর বিষয়টা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। এটা পরিচালনার দায়িত্ব আমাদের না। এটা সরকার নিয়েছে। আমাদের কাজ ছিল ফ্যাসিলিটিজ (নির্মাণ সুবিধা) দেওয়া, আমরা দিয়ে দিয়েছি। এখন সরকার করবে পুরোটা।

হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে দুই হাজার ১৩টি। ছয় ক্লাস্টারে এক হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এ ছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরো ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। এ ছাড়া দেড় হাজার রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া যাবে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দু হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ ১২ এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন করে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

Advertisement