উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। তবে করোনা পরিস্থিতিতে বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে চায় না বিএনপি ও পরিবারের সদস্যরা। আর এবার খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনেও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানায়নি পরিবার।তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে উন্নত চিকিৎসার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, বেগম জিয়ার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হোক, যেন তিনি যেখানে ইচ্ছে সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া বিদেশ যাবেন কি না- জানতে চাইলে তার আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বর্তমানে ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। উনার পরীক্ষাও চলছে। আর এই (বিদেশ) ধরণের পরিকল্পনা আপাতত নেই।খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার আধুনিক চিকিৎসা ও আধুনিক কেন্দ্রের প্রয়োজন। আর উনাকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে সুচিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা অনেক দিন আগে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু আমাদের করোনা পরিস্থিতি সার্বিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।এদিকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে ভর্তি করানোর হয়। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল সিটি স্ক্যান করাতে খালেদা জিয়াকে এই হাসপাতালে আনা হয়েছিলো।
এরপর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন উঠেছে খুব শিগগির উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বিদেশে যাবেন। কিন্তু বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ হলেও করোনাকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চাচ্ছেন না খালেদা জিয়া। তিনি করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এবিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন বলে জানিয়েছেন।তবে দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করতেই বিএনপি খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে মনে করছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, সরকারের তৎপরতায় করোনা পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণে আসছে, তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি- কিছু মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছে তাই সমালোচনা করছে। টেলিভিশনের সামনে যা তাই বলছে। তাদের কোন দায়িত্ব নেই। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে আতঙ্কিত করা। এজন্য তারা এমন পথ অবলম্বন করেছে যে, বেগম জিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। যাতে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, ৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দন্ডিত। দন্ড নিয়ে ৩ বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়, শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।