ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নতুন করে এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) করা হলো ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়ে বহু শিক্ষক-কর্মচারীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো।
প্রধানমন্ত্রী আজ ঘোষণা দিলেও এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে গত জুলাই মাস থেকে। সাড়ে ৯ বছর পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হলো।
সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছিল, এবার ২৭৬৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬৫০–এর মতো বিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ২৭৩০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ঘোষণা এলো।
বুধবার গণভবনে নতুন করে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সব যোগ্য প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদেরকে এমপিওভুক্ত করা হলো তাদের এই যোগ্যতা ধরে রাখতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্যতা ধরে রাখতে না পারলে এমপিও বাতিল করা হবে। এসময় এমপিও হওয়া সব শিক্ষক-কর্মচারীকে অভিনন্দন জানান তিনি।
নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-৮ম) ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬ষ্ঠ-১০ম) ৯৯৪টি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় একাদশ থেকে দ্বাদশ ৬৮টি, কলেজ একাদশ থেকে দ্বাদশ ৯৩টি, ডিগ্রি কলেজ (১৩শ-১৫শ) ৫৬টি, মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাখিল ৩৫৭টি, আলিম ১২৮টি, ফাজিল ৪২টি, কামিল ২৯টি। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কৃষি ৬২, ভোকেশনাল ১৭৫ এবং এইচএসসি (বিএম) ২৮৩টি।
এমপিওভুক্তির দাবিতে ২০১০ সালের পর থেকেই থেমে থেমে আন্দোলন করে আসছিলেন এমপিওভুক্ত নয়, এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, সর্বশেষ যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল, তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান এবার এমপিওভুক্ত হচ্ছে।
প্রায় এক ঘণ্টার মতবিনিময়সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। যোগ্য বিবেচিত একটি প্রতিষ্ঠানও বাদ যাবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হবে না।
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আবেদন বাছাই করে যোগ্য তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় কেবল পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট উপজেলার মেধাক্রম অনুসারে সেরা প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আরও বলেন, এমপিওভুক্ত হওয়াসহ সব প্রতিষ্ঠানকে নীতিমালা অনুযায়ী মান ধরে রাখতে হবে। এতে কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হলে সেটির এমপিও সাময়িক স্থগিত করা হবে।
পুনরায় যোগ্যতা অর্জন করতে পারলে এ সুবিধার আওতায় আবার আনা হবে। তিনি বলেন, এখনও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নজরদারির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এখন থেকে এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠানকে নজরদারির আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও শিক্ষার মান বাড়াতে মনিটরিং ব্যবস্থা বাড়ানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।