কক্সবাজারের সব পর্যটন ও বিনোদন স্পট বন্ধ ঘোষণা

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ সব ধরণের পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। রাতের মধ্যে এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম।সৈয়দ মুরাদ ইসলাম জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত জেলার সব পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ব্যারিকেড স্থাপন করেছে জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সৈকতে প্রচারাভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া সুলতানা ও সৈয়দ মুরাদ ইসলামের নেতৃত্বে টিম।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ২০২১ সালের শুরুর দিকে দেশে করোনার প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। জানুয়ারি—ফেব্রুয়ারি পেরিয়ে মার্চের প্রথমদিকেও শনাক্ত এবং মৃত্যুর হার কম ছিল, কিন্তু মার্চের শেষ দিকে ফের করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কক্সবাজার জেলায় সংক্রমণ পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় করোনা প্রতিরোধ এবং প্রাণহানি রুখতে বাড়তি সতর্কতার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সভাপতি মো. মামুনুর রশীদ আরও বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে। যা কার্যকর করতে জেলাব্যাপী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়নে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ এবং প্রাণহানি কমাতে জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের আরও বেশি সতর্ক এবং কার্যকরী উদ্যোগের বিকল্প নেই। সতর্কতার পাশাপাশি জনসমাগম এড়িয়ে চলা, মাস্ক পরা এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা; পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে জেলায় বুধবার (৩১ মার্চ) কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে ৪০৪ জনের নমুনা টেস্ট করে ৪৩ জনের করোনা ‘পজিটিভ’ পাওয়া গেছে। বাকি ৩৬১ জনের নমুনা টেস্ট রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে।কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহজাহান নাজির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।বুধবার শনাক্ত হওয়া ৪৩ জন করোনা রোগীর মধ্যে কক্সবাজার জেলার রোগী ৪১ জন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ১ জন এবং চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার ১ জন রোগী রয়েছে।কক্সবাজার জেলার ৪১ জন রোগীর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৮ জন, রামু উপজেলায় ৩ জন, উখিয়া উপজেলায় ২ জন, টেকনাফ উপজেলায় ৫ জন, চকরিয়া উপজেলায় ২ জন ও মহেশখালী উপজেলার ১ জন রোগী রয়েছে। এনিয়ে বুধবার (৩১ মার্চ) পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো মোট ৬ হাজার ৫শ’ ১৮ জন। এরমধ্যে গত ৩০ মার্চ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করছে ৮৩ জন। তারমধ্যে ১০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ১.৩০%।

Advertisement