করোনাঝুঁকিতে এবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেই জনতার

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :  আজ বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। দিনটি উপলক্ষে মাসজুড়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকাসহ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আগেই প্রস্তুত রাখা হয় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। কিন্তু স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হওয়া এবং আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধনের পর এবারই প্রথম জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা বন্ধ রয়েছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাভার গণপূর্ত অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে ধোয়া-মোছা ও রঙ-তুলিসহ সকল কার্যক্রম সফল করা হলেও লোক মাগম করা যাবে না বলে সরকারি নির্দেশনা থাকায় স্মৃতিসৌধে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ দিতে আসেনি।দিবসটি উপলক্ষে অতীতে সব সময় কুয়াশা ভেজা ভোরে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন বীর শহীদদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেও এবারেই প্রথম স্বাধীনতা দিবসে ফাঁকা রয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।

মহান এ দিনটিতে স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল নামেনি, ফুল হাতে দেখা মেলেনি কাউকে। ছোট্ট কোনো শিশুরও দেখা মেলেনি। তবে দিবসটিতে সকালে স্মৃতিসৌধের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে একজন সাংস্কৃতিক কর্মীকে। তিনি হলেন জাগরণী থিয়েটার ও সাভারের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এর সাধারণ সম্পাদক মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা স্মরণ সাহা। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনা ভাইরাস (কেভিড-১৯) আমাদের গত ৪৯ বছরের সংস্কৃতিকেও থামিয়ে দিয়েছে। দিনটিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে না পারলেও তিনি অন্তর দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

জাতির সেইসকল শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে ঢাকা মহানগরী থেকে ৩৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাভারের নবীনগরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ১০৮ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এই স্মৃতিসৌধ আপামর জনসাধারণের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের স্মরণে নিবেদিত এবং শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ জাতির শ্রদ্ধার্ঘের উজ্জ্বল নিদর্শন সরূপ।গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পরের বছর ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্মৃতিসৌধের মিনার ব্যতীত প্রকল্পটির পরিকল্পনা ও নৈসর্গিক পরিকল্পনাসহ অন্য সমস্ত নির্মাণ কাজের স্থাপত্য নকশা প্রনয়ন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থাপত্য অধিদপ্তর। মিনারের স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন করেন বাংলাদেশের খ্যাতনামা স্থপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেন। সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর ১৯৮৮ সালের জুন মাসে এর সকল নির্মাণ কাজ শেষ করে।

এই মিনার ঘিরে রয়েছে কৃত্রিম হ্রদ এবং মনোরম বাগান। সৌধ চত্বরে রয়েছে মাতৃভূমির জন্য আত্মোৎসর্গকারী অজ্ঞাতনামা শহীদদের দশটি গণকবর, উম্মুক্ত মঞ্চ, অভ্যর্থনা কক্ষ, মসজিদ, দুটি হেলিপ্যাড এবং ক্যাফেটেরিয়া। আরো রয়েছে পুষ্পস্তবক অর্পণ বেদী, ভাস্কর্য চত্বর, সেতু, রক্ষণাবেক্ষণ দপ্তর, নার্সারি, জলাধার (পুকুর), গাড়ি রাখার স্থান, কর্মচারী আবাসন, রেস্তোরাঁ, পাবলিক টয়লেট ইত্যাদি।

Advertisement