ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ফ্রান্সে আঘাত হানতে শুরু করেছে । গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আশংকাজনকভাবে বেড়ে চলছে । সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হলেও অনেকে তা মানছে না । ফলে করোনা সংক্রমণ আবারো বেড়ে চলছে দেশটিতে । করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিপদজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত Île-de-France (প্যারিস ও পার্শ্ববর্তী ৭টি ডিপার্টমেন্ট) এবং ফ্রান্সের অন্য ৮টি শহর Grenoble, Lille, Lyon, Aix-Marseille, Saint-Étienne, Toulouse, Montpellier, Rouen কারফিউয়ের আওতায় থাকবে।।বুধবার টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, কারফিউ কার্যকর হবে আগামী শনিবার থেকে। চলবে অন্তত চার সপ্তাহ। মানুষজনকে রাত ৯ টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘরে থাকতে হবে। কারফিউ ভঙ্গ করলে গুনতে হবে জরিমানা। দেশটিতে বুধবার নতুন করে ২২ হাজার ৯৫১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দিলেন।
এর কিছুক্ষণ আগে ফ্রান্স সরকার নতুন করে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছে।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “আমরা (মহামারির) দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর মতো ফ্রান্সও করোনাভাইরাস সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বুধবার দেশটিতে নতুন ২২, ৫৯১ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে টানা তৃতীয়দিনের মতো ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ভাইরাসে দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি মানুষের।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “ফ্রান্সে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। তবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।”
তিনি জানান, কারফিউয়ের আওতায় মানুষ সন্ধ্যায় কিংবা রাতে কোনও রেস্তোঁরায় কিংবা কারও বাসায় যেতে পারবে না। কেবল জরুরি প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া যাবে। কেউ কারফিউ ভঙ্গ করলে তাকে ১৩৫ (১৫৯ ডলার) ইউরো জরিমানা দিতে হবে।
তবে ফ্রান্সে গণপরিবহনের ওপর কোনও বিধিনিষেধ থাকছে না। মানুষ অবাধেই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যাতায়াত করতে পারবে। যদিও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাতের ক্ষেত্রে ৬ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্সে বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণের হার ২০ হাজার থেকে ৩ হাজারে নামিয়ে আনা এবং হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রোগীর চাপ কমানোর লক্ষ্যেই কড়াকড়ির এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ দিকে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে পুরো ইউরোপ জুড়েই এ ধরনের বিধি নিষেধ আসছে। নেদারল্যান্ডের বার ও রেস্তোরা গ্রিনিস মান সময় রাত ৮টা থেকে বন্ধ করা হচ্ছে।
উত্তর-পূর্ব স্পেনের কাটালোনিয়া বলছে সেখানে বৃহস্পতিবার থেকে বার ও রেস্তোরা ১৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। চেক রিপাবলিকে প্রতি লাখে ৫৮১ জন শনাক্ত হয়েছে। যা গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিবিসি জানায়, পুরো ইউরোপেই আক্রান্ত শনাক্ত সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার রাশিয়ায় মারা গেছে ২৩৯ জন। এসময় সেখানে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৩২১ জন।