মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় কমল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ মারা গেছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে প্রায় তিন লাখ ৪২ হাজারে পৌঁছেছে।সর্বশেষ এক দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা অনেকটা কমে আসায় দৈনিক সংক্রমণের শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের নাম। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এখনো শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। আর এরপরই তালিকায় রয়েছে ব্রাজিল-যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকো। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় শনাক্তের সংখ্যা ২৪ কোটি ১১ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে প্রাণহানির সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৯ লাখ নয় হাজারে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার (১৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ হাজার ৩২৩ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় প্রাণহানির সংখ্যা কমেছে ১৬৩০ জন। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৪৯ লাখ নয় হাজার ৬১৮ জনে পৌঁছেছে।
নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন তিন লাখ ৪১ হাজার ৯৯৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা কমল প্রায় ৯৩ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটির থাবায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৪ কোটি ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।এ দিকে গেল এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটল যুক্তরাজ্যে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৪২৩ জন। আর মারা গেছেন ১৪৮ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৪ লাখ চার হাজার ৪৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন এক লাখ ৩৮ হাজার ৫২৭ জন।শেষ ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনার থাবায় নতুন সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই কমেছে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৯১০ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৬৪ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৭৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন সাত লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৫ জন।অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার দুইজন। আর নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩ হাজার ২০৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ২২ হাজার ৩১৫ জনের।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭২ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১১ হাজার ২৫০ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭২৬ জন। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ তিন হাজার ১৯৯ জনের।
এ দিকে করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। শেষ এক দিনে দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৬ জন। নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৭৩ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি ৪০ লাখ ৬৬ হাজার ৭৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া মারা গেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ১৫৬ জনের।এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১৮১ জন, ইউরোপের দেশ তুরস্কে ২১২ জন এবং ইউক্রেনে ২৭৭ জন মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৪৩৪ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার আটজনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।