করোনা সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে: বরিস জনসন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তাঁর দেশের জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, কারোনা সঙ্গে নিয়েই বেঁচে থাকা শিখতে হবে। আজ সোমবার করোনা ভাইরাস বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের বিষয়ে ঘোষণা দেয়ার কথা তার। এ সময়ে তিনি জনগণের প্রতি ওই আহ্বান জানাবেন বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। তিনি বৃটেনের বিধিনিষেধ গত ২১শে জুন তুলে নেয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু উচ্চ মাত্রায় সংক্রমণযোগ্য ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আধিক্যের কারণে এবং বিজ্ঞানীদের পরামর্শে তিনি বিধিনিষেধের মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে বৃটেনে যেসব মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তার প্রায় সবই এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে। কিন্তু অর্থনৈতিক এবং জনগণের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে তিনি আগামী ১৯ শে জুলাই থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। এ জন্য আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে বরিস জনসনের।

অন্যদিকে এ ইস্যুতে পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখার কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের।ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে রাশিয়ার পরেই করোনা ভাইরাসে বৃটেনে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন। এ সংখ্যা কমপক্ষে এক লাখ ২৮ হাজার। কিন্তু আস্তে আস্তে সেখানে তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ করে আনা হচ্ছে। কিছু এলাকায় এখনও বিধিনিষেধ আছে। এখনও নাইটক্লাবগুলো খোলার অনুমতি দেয়া হয়নি। বড় কোনো ইভেন্ট পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা নিয়ে আয়োজন করার অনুমতি নেই। প্রকাশ্যে সব রকম সার্ভিস চালু হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, যদি বিধিনিষেধ তুলে নেয়া হয় তাহলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে সর্বশেষ পরিস্থিতি। তবে টিকা দেয়ার ফলে হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর সংখ্যা দুর্বল হয়েছে। ডিসেম্বরে বিশ্বে সবার আগে প্রথম করোনার টিকা শুরু করা হয়। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে শতকরা প্রায় ৬৪ ভাগকে দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়ে গেছে। ওদিকে সংবাদ সম্মেলনের আগে দেয়া এক বিবৃতিতে জনসন বলেছেন, আমরা কিভাবে জনগণের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে পারি, সে বিষয়ে আজ সোমবার ঘোষণা দেয়া হবে। কিন্তু এখনও করোনা মহামারি শেষ হয়ে যায়নি। তাই জনগণকে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস করা শিখতে হবে। এক্ষেত্রে তাদেরকেই তাদের জীবন নিয়ে বিচার করতে হবে। কয়েক দিন ধরেই বৃটিশ সরকার সাধারণ মানুষজনকে সাধারণ জ্ঞান ব্যবহার এবং প্রকাশ্যে বেরুনোর সময় মুখে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে স্কটিশ সরকার আরো সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে।

কিন্তু মাস্ক পরার মাধ্যমে বিধিনিষেধ শিথিল করার পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন কিছু শিক্ষাবিদ। স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব সেইন্ট অ্যানড্রুসের সমাজবিজ্ঞানের প্রফেসর স্টিফেন রিচার বলেছেন, এমন একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ভয় পেতে হচ্ছে, যিনি সব নিরাপত্তা ব্যক্তিগত পছন্দের ওপর ছেড়ে দিতে চাইছেন। তিনি বলেন, তাদের আচরণ আমার স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। আচরণগত পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর সুসান মিচি’ও সরকারের সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, কমিউনিটি সংক্রমণকে অনুমোদন দেয়ার মাধ্যমে আমরা অতি বেশি হারে নতুন ভ্যারিয়েন্টকে ছড়িয়ে পড়তে দিচ্ছি। সপ্তাহান্তে বৃটিশ মেডিকেল এসোসিয়েশন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, দিনে সেখানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। যেহেতু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাই কিছু বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখা উচিত।

Advertisement