কারবালায় বিক্ষোভকারীদের ওপর মুখোশধারীদের হামলা, নিহত ১৮

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ইরাকে শিয়াদের পবিত্র শহর কারবালায় সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর মুখোশধারীদের হামলায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অনেকে। চলতি মাসের শুরুতে এই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরু থেকেই বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে সরকারপন্থি বাহিনীগুলো। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা ছিল এটি। সোমবার দিবাগত রাতে এই হামলা চালানো হয়। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

খবরে বলা হয়, দেশজুড়ে বেকারত্ব, নিম্নমানের জনসেবা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ মাসের শুরু থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় ইরাকে । সহিংস এই বিক্ষোভে প্রাণ হারায় বহু মানুষ। বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনেন।

আরো অভিযোগ করেন রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে সাধারণ জনগণের জীবনমান উন্নত করার দিকে নজর দেন না। গত সপ্তাহে সরকারি একটি তদন্ত কমিটি জানিয়েছিল, বিক্ষোভে ১৪৯ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগকেই বুকে বা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিগত এক সপ্তাহে মারা গেছেন আরো প্রায় ১০০ জন। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এখন পর্যন্ত চলতি মাসে বিক্ষোভে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪০ জনের বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারবালায় বিক্ষোভকারীদের ওপর এই হামলা চলমান বিক্ষোভের গতিবেগ পাল্টে দিতে পারে। সাময়িক বিরতির পর ফের টানা পাঁচদিন ধরে ইরাকের রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে। সোমবার মুখোশধারীরা কারলাবালার এডুকেশন স্কয়ারে হামলা চালিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সেখানে তাবু টানিয়ে অবস্থান করছিল। এই হামলার পেছনে কারা ছিল তা জানা যায়নি। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তারাও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। তারা বলেন, ইরাকী পুলিশরা হামলাস্থলের কাছেই অবস্থান করছিল। তবে হামলা শুরু হওয়ার পরপরই তারা স্থানত্যাগ করে। প্রসঙ্গত, ইরাক সরকারের হয়ে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়ারা বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি সরকার বিক্ষোভের মুখে মন্ত্রীপরিষদে রদবদল আনা ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে তাতে বিক্ষোভ স্তিমিত হয়নি। বিক্ষোভকারীদের দমাতে শুরু থেকেই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মাহদি সরকার। সম্প্রতি ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করে দেখতে এই কমিটি গঠন করেন। এছাড়া, তার মন্ত্রীপরিষদে রদবদল আনা ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তবে তার সমালোচকরা বলছেন, মাহদির প্রতিশ্রুতি অ¯পষ্ট। এতে জনগণের ক্ষোভ কমবে না। ইতিমধ্যে আগামী শুক্রবার ফের বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে আয়োজকরা। প্রসঙ্গত, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ বন্ধ রয়েছে।

Advertisement