কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের চিহ্ন পায়নি মেডিকেল বোর্ড

কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, তারা কিশোরের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি থাকার পর গত ৪ মার্চ জামিনে মুক্তি পান কিশোর।তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ওপর প্রস্তুত করা প্রতিবেদন দুই মাস আগে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে জমা দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। রোববার (৬ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার রাশেদুল ইসলাম বিষয়টি জানান।তিনি বলেন, দুই মাস আগে আদালতে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। সেখানে তাদের দুটি মূল্যায়ন রয়েছে। একটি হচ্ছে, (কিশোরের) শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রয়োজনবোধে (কিশোরের) আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যেতে পারে। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন।গত বছরের মে মাসে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদ, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে গ্রেফতার করে র্যাব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে তখন ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয়বার নাকচ হয়।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বন্দি অবস্থায় মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ । পরে ৩ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কার্টুনিস্ট কিশোরের ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করেন। ৪ মার্চ মুক্ত হন তিনি।জামিনে মুক্তির পর ১০ মার্চ ‘নির্যাতনের বর্ণনা’ আদালতে তুলে ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অজ্ঞাত সদস্যদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। গত ১৪ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ সংক্রান্ত আদেশ দেন। কিশোর তার কান, পা ও শরীরের যেখানে আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন, সেগুলো পরীক্ষা করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিচালককে নির্দেশ দেন আদালত।আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ১৬ মার্চ কিশোরের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক। মেডিকেল বোর্ডে রাখা হয় নাক কান ও গলা (ইএনটি) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি, মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাফিজ সর্দার এবং অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফখরুল আমীনকে।এই মেডিকেল বোর্ডই আদালতে ওই প্রতিবেদন জমা দেয়।

Advertisement