চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন থেরাপিতে সেরে ওঠেছেন অনিরাময়যোগ্য রক্তের ক্যানসার আক্রান্ত যুক্তরাজ্যের এক কিশোরী। নাম অ্যালিসা।এর আগে তার চিকিৎসায় যেসব থেরাপি ও পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল তার সবগুলোই ব্যর্থ হয়েছিল। রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।যুক্তরাজ্যের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের চিকিৎসকরা ‘বেস ইডিটিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে অ্যালিসার রক্তের ক্যানসারের চিকিৎসা করেন। মাত্র ছয় বছর আগে এটি আবিষ্কার করা হয়।অ্যালিসাই বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি যাকে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়েছে। ২০২১ সালের মার্চে ১৩ বছর বয়সি অ্যালিসার টি-সেল অ্যাকিউট লাইমফোব্লাস্টিক রক্তের ক্যানসার ধরে পড়ে।টি-সেল শরীরের রক্ষক হিসাবে কাজ করে। শরীরের মধ্যে থাকা ঝুঁকি দূর করে এটি। কিন্তু অ্যালিসার শরীরে টি-সেল নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়তে থাকে।তাকে ক্যানসার থেকে সারিয়ে তুলতে ক্যামোথেরাপি এবং বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। তবে এগুলো তার শরীর থেকে ক্যানসার নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ‘বেস ইডিটিং’ থেরাপি ব্যবহার করেন তারা। ছয় মাস পর অ্যালিসার শরীরে আর ক্যানসার পাওয়া যায়নি।তবে এখনো অ্যালিসাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অ্যালিসাকে দিয়ে নতুন এ থেরাপির পরীক্ষা করা হয়েছে।
যদি তারা এ পদ্ধতি প্রয়োগ না করতেন তাহলে অ্যালিসা ‘যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন’ পর্যন্ত যেন খুব বেশি কষ্ট না পান সে ধরনের ওষুধ দেওয়া হতো। কারণ তার শরীরের ক্যানসার নিরাময়ের কোনো ওষুধ বা পদ্ধতি আর অবশিষ্ট ছিল না।যখন চিকিৎসকরা নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার কথা অ্যালিসা ও তার পরিবারকে জানান তখন অ্যালিসাই জানায় পরীক্ষামূলক এ চিকিৎসা করাতে প্রস্তুত আছে সে। গ্রেট ওরমন্ড হাসপাতালের প্রফেসর ওয়াসিম কাসিম বলেছেন, ‘এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নেওয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন অ্যালিসা।’ক্যানসারের নতুন পদ্ধতির চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর অ্যালিসা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারণ তার শরীরে যে সেলগুলো প্রবেশ করানো হয় সেগুলো ক্যানসারের সেলের সঙ্গে তার শরীরের রক্ষক সেলেরও ক্ষতি করছিল।এ কারণে মাঝে এ চিকিৎসা স্থগিত করে দেওয়া হয় এবং অ্যালিসার আবারও বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়। তিন মাস পর যখন আবার তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তখন তার শরীরে ক্যানসারের সেল পাওয়া যায়। যা চিকিৎসকদের উদ্বিগ্ন করে দেয়। কিন্তু পরের দুই মাসের পরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসার সেলের আর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।