গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৩ শিশুসহ নিহত বেড়ে ২১৮

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদারিত্বকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সংঘাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ২১৮ জন ফিলিস্তিনির, যাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৬৩ জন; আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড় হাজার।অন্যদিকে, গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী দল হামাসের ছোড়া রকেটে ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১২ জনে। সেখানে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন।গাজা উপত্যকায় বসাবাসকারী আরব নৃগোষ্ঠীর স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং ইসরায়েলি বসতকারীদের (সেটলার) ভূমি দখলকে কেন্দ্র করে হামাস ও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মধ্যে শুরু হওয়া এই সংঘাত গড়িয়েছে নবম দিনে। এই নয়দিনে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর ও স্থাপনা লক্ষ্য করে হামাস প্রায় ৩ হাজার ৪৫০ টি রকেট ছুঁড়েছে হামাস।

ক্ষেপনাস্ত্র অকার্যকর ব্যবস্থা (অ্যান্টি মিসাইল সিস্টেম) আয়রন ডোম ব্যবহার করে ছোড়া রকেটগুলোর ৯০ শতাংশই অকার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী, কিন্তু তারপরও আশদোদ, আশকেলন, বিরসেবা শহরসহ দেশটির উত্তরাংশে বেশ ক্ষয়ক্ষতি করতে সক্ষম হয়েছে হামাসের ছোড়া রকেটগুলো।হামাসের রকেট থেকে বাঁচতে এই শহরগুলোর লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, হামাসের কাছে এখনও ছোড়ার মত ১২ হাজার রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।অন্যদিকে, নিয়মিত বিরতিতে প্রতিদিনই গাজাজুড়ে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েল সেনা বাহিনীর হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চারশ’ ভবন গুড়িয়ে গেছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া এই ভবনগুলোর মধ্যে ছয়টি হাসপাতাল ও কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও আছে।এছাড়া গত ৯ দিনের সংঘাতে এ পর্যন্ত গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অন্তত ৪৮ হাজার থেকে ৫২ হাজার মানুষ। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমান হামলা ও আর্টিলারি গোলার আঘাত থেকে বাঁচতে তারা বাড়িঘর ছেড়ে জাতিসংঘ পরিচালিত ৫৮ টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজায় অনেক হামাস সদস্যের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। এই বাড়িগুলোতে বসবাসের পাশাপাশি হামাসের সাংগঠনিক বৈঠক ও অস্ত্রের মজুত করা হতো বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা।মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক থাকার কারণে সাম্প্রতিক এই সংঘাতে ব্যাপক চাপে আছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গত মাসে দেশের জাতীয় নির্বাচন স্থগিত করেছিলেন তিনি এবং তখন হামাস এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছিল।

Advertisement