ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: করোনা ভাইরাস মহামারিতে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে লাখ লাখ গার্মেন্ট কর্মীদের সহায়তার জন্য একটি তহবিল গঠন করবে বৃটেনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রাইমার্ক। করোনার কারণে যেসব দেশে গার্মেন্টে কাজের অর্ডার বাতিল করা হয়েছে তাদেরকে সহায়তার জন্য এই তহবিল গঠন করা হবে। বাংলাদেশ গার্মেন্ট এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সম্প্রতি তথ্য প্রকাশ করে যে, প্রাইমার্ক তার সব অর্ডার ইতিমধ্যে বাতিল করেছে। এরপর ব্যাপক সমালোচনা ওঠে। তার প্রেক্ষিতেই প্রাইমার্ক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের জনপ্রিয় দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন।
এতে বলা হয় প্রাইমার্ক, মাতালান ও এডিনবার্গ উলেন কোম্পানি বাংলাদেশে ১৪০ কোটি পাউন্ডের কাজের আদেশ বাতিল করেছে। স্থগিত করেছে আরও ১০০ কোটি পাউন্ডের অর্ডার। করোনা মহামারিতে যখন সরবরাহকারীরা লোকসান সর্বনি¤œ করার জন্য লড়াই করছে, তখন এসব ব্রান্ড ওই সিদ্ধান্ত নেয়।
তাদের কার্যাদেশ বাতিলের সিদ্ধান্তে এরই মধ্যে বাংলাদেশের ১০ লক্ষাধিক গার্মেন্ট কর্মী হয়তো চাকরি হারিয়েছেন, না হয় তাদেরকে বেতন ছাড়াই ঘরে ফেরত পাঠানো হতে পারে। এ অবস্থায় প্রাইমার্ক ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামে অর্ডার বাতিল করায় যেসব শিপমেন্ট যাওয়ার কথা ছিল, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টকর্মীদের বেতন দেয়ার সহায়তার জন্য একটি তহবিল সৃষ্টি করবে প্রাইমার্ক। তারা এটা বলেছে যে, সরকার যে সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বেতন খাতে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে, এই তহবিল তার সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হবে। এটা এমন একটা বিষয়, যা সরবরাহকারী ও শিল্প সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করেছে।
বিজিএমইএ’র চেয়ারপারসন রুবানা হক বলেছেন, অর্ডার বাতিল হওয়ার ফলে ক্ষতির শিকার শ্রমিকদের সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রাইমার্ক। আমরা তাদের এ ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। তবে তারা আসলে কি বোঝাতে চাইছে সেটা যথেষ্ট পরিষ্কার নয়। মজুরি ক্ষতিপূরণে সরকারি ঋণ বিবেচনায় নেয়া উচিত হবে না। বিদ্যমান এসব ব্রান্ডের ব্যবসায়িক প্রতিশ্রুতি রয়েছে সরবরাহকারীদের সঙ্গে, যার প্রতি তাদের সম্মান দেখানোর দায়বদ্ধতা রয়েছে।
এ অবস্থায় যেসব অর্ডার ব্রান্ডগুলি বাতিল করেছে এবং তাদের অর্ডার সরবরাহ দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে যেসব কাঁচামাল কিনেছে সরবরাহকারীরা, সে খাতে কোনো চালান দিতে প্রাইমার্ক রাজি হবে কিনা সে বিষয়ে আরো সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করেন বাংলাদেশের কারখানা মালিকরা।
করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রাইমার্কের সব খুচরা আউটলেট বন্ধ রয়েছে। এর ফলে তারা মাসে ৬৫ কোটি পাউন্ড ক্ষতির শিকার হচ্ছে। প্রাইমার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পল মার্চেন্ট বলেছেন, বিক্রি হয়নি এমন ১৬০ কোটি পাউন্ডের পণ্য এখনও তাদের বিভিন্ন স্টোরে জমা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সারাবিশে^ আমাদের প্রতিটি স্টোর বন্ধ। স্টোরে, গুদামে এবং ট্রানজিটে রয়েছে স্তূপ হয়ে আছে পণ্য। তাই ভবিষ্যতের জন্য অর্ডার বাতিল করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে আমাদের। আমাদের সরবরাহ চেইনে এসব দেশের শ্রমিকরা যাতে তাদের বেতন পান গত দুটি সপ্তাহে এর উপায় নিশ্চিত করাই ছিল আমাদের অগ্রাধিকারে। আমরা সন্তুষ্ট যে, এই তহবিল ওইসব শ্রমিকদের স্বস্তি দেবে।