ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ঘন কুয়াশার কারণে সিগন্যাল আগেভাগে দেখতে না পাওয়ার কারণে কসবার মন্দবাগে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। তুর্ণা নিশিথা ট্রেনের সাময়িক বহিস্কৃত চালক তাহের উদ্দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের কাছে সিগন্যাল দেখতে না পাবার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
তবে মন্দনাগ রেল স্টেশনের মাস্টার জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আউটার ও হোম দু’জায়গাতেই তূর্ণাকে দাঁড়ানোর জন্য সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল।’
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো: শামছুজ্জামান দুর্ঘটনার বার্তা পেয়ে ভোরে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাঁর কাছে তথ্য আসে, তূর্ণা নিশিথা ট্রেনের চালক ঘন কুয়াশার কারণেই চালক সিগন্যাল দেখতে পায়নি আগে থেকে।
মো. শামছুজ্জামান বলেন, তুর্ণা নিশিথা ট্রেনটি ৬০-৬৫ কিলোমিটার গতিবেগে চলছিল। চালক লাল সংকেত আগে থেকে দেখতে পাননি। তার কারণ সম্ভবত ঘন কুয়াশা। সে যখন সংকেত দেখতে পায়, তখন ‘ইর্মাজেন্সি ব্রেক’ করে। তারপর ট্রেনের গতিবেগ ২০ কিলোমিটারে নেমে আসে। কিন্ত পুরো গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি সে। এজন্য আমরা স্পিড রেকর্ডারও পরীক্ষা করে দেখছি। আমি ঢাকা শহর থেকে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার পরও ঘন কুয়াশা দেখেছি। আমরা মনে করি, ঘন কুয়াশার কারণে মুলত: দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে তদন্তের পর মূল কারণ বের হয়ে আসবে। এজন্য আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে সচেষ্ট আছি। সংশ্লিষ্টরা তদন্ত কাজ জোর দিয়েই করছেন।
পর্বেক্ষকেরা বলছেন, আউটার ও হোম দু’টো সিগন্যাল কীভাবে মিস করলেন সেটা একটা প্রশ্নই বটে। ঘন কুয়াশার কারণে চালক দুটো সিগন্যালই দেখতে পাননি নাকি, স্টেশন মাস্টার শুধু হোম সিগন্যাল দিয়েছিলেন সেটি এখন প্রশ্নের বিষয়। মো. শামছুজ্জামান যে সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ার কথা বলছেন, সেটা হয়তো হোম সিগন্যাল। স্টেশন মাস্টারের কথা অনুযায়ী চালক দু’টো সিগন্যালই মিস করেছেন। যখন হোম সিগন্যাল দেখেছেন তখন দেরি হয়ে গেছে তবে লোকোর গতি ৬০-৬৫ কিলোমিটার থেকে ২০ কিলোমিটারে নামিয়ে আনেন।
আগের রাতে দুর্ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের লোকোমাস্টার বা চালক তাহের উদ্দিন, সহকারি লোকোমাস্টার অপু দে ও গার্ড আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যপারে রেলমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শনশেষে সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা মনে করছি, চালকের অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও রেল মন্ত্রণালয় থেকে একটি রেলওয়ে থেকে তিনটি এবং জনশাসন থেকে একটিসহ মোট পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।