চট্টগ্রামে প্রায় এক মাস পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার এক অংকের ঘরে নেমে এসেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২১৭ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে শহর ও গ্রামে কোনো রোগির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি।চট্টগ্রামের করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো আজকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দুই অংকের ঘরে উঠে গত ১১ জানুয়ারি। এদিন ২২২ জন নতুন বাহক শনাক্ত হয় এবং সংক্রমণ হার নির্ণিত হয় ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি ও নগরীর আট ল্যাবরেটরি এবং এন্টিজেন টেস্টে গতকাল ৩ হাজার ১২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন আক্রান্ত ২১৭ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১১১ জন ও ১৪ উপজেলার ১০৬ জন। উপজেলার ১০৬ জনের মধ্যে হাটহাজারীতে ১২ জন, মিরসরাই, পটিয়া ও চন্দনাইশে ১১ জন করে, ফটিকছড়ি ও সাতকানিয়ায় ৯ জন করে, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে ৮ জন করে, রাউজানে ৭ জন, সীতাকু-ে ৬ জন, বাঁশখালীতে ৫ জন, আনোয়ারা ও লোহাগাড়ায় ৪ জন করে এবং সন্দ্বীপে একজন রয়েছেন। কর্ণফুলী উপজেলায় কোনো নতুন রোগি শনাক্ত হয়নি। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৪২ জনে। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯০ হাজার ৬১১ জন এবং গ্রামের ৩৩ হাজার ৯৩১ জন। গতকাল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ মারা যাননি। ফলে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৬০ জন রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ৭৩৪ জন ও গ্রামের ৬২৬ জন।ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ৬৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শহরের ৪২ ও গ্রামের ৩৩ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৮৯ টি নমুনার মধ্যে শহরের ২ ও গ্রামের ৩ টিতে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে পরীক্ষিত ২৩৮ টি নমুনায় শহরের ১১ ও গ্রামের ৩৭ টি আক্রান্ত শনাক্ত হয়। বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে শহরের ৫ জনের দেহে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ৪৯৮ জনের নমুনায় শহরের ১১ ও গ্রামের ৮ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৪০৭ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ১৭ ও গ্রামের ৪ টিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৩২৬ টি নমুনার মধ্যে শহরের ৪ ও গ্রামের ৭ টিতে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ল্যাবে ৩৯৩ জনের নমুনায় শহরের ১১ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে পরীক্ষিত ৩৫৬ জনের নমুনায় শহরের ৮ জনের দেহে করোনার জীবাণু চিহ্নিত হয়। শহর ও উপজেলায় নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ১৭২ জনের এন্টিজেন টেস্ট করা হলে গ্রামের ১৪ জন আক্রান্ত বলে জানানো হয়।এদিন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (চমেকহা), এপিক হেলথ কেয়ার, ল্যাব এইড, মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি।ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ১১ দশমিক ৮৬, চবি’তে ৫ দশমিক ৬১, সিভাসু’তে ২০ দশমিক ১৭, আরটিআরএলে ৪১ দশমিক ৬৬, শেভরনে ৩ দশমিক ৮১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৫ দশমিক ১৬, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ৩ দশমিক ৩৭, মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ২ দশমিক ৮০, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ২ দশমিক ২৪ এবং এন্টিজেন টেস্টে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ।