জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে, তবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি: ডিএমপি কমিশনার

দেশে জঙ্গিদের উত্থানের আর সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।শনিবার (১ জুলাই) সকালে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিজানে নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দেশে নিয়ন্ত্রণে আছে। হলি আর্টিজানের মতো হামলার সক্ষমতা এখন আর নেই জঙ্গিদের।ডিএমপি কমিশনার বলেন, আজ থেকে ৭ বছর আগে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই হলি আর্টিজানে বিদেশি নাগরিকদের অতর্কিতভাবে জঙ্গিদের জিম্মি করা ও তাদের হত্যা করা হয়। এ সময় তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে আমাদের দুইজন সিনিয়র পুলিশ সদস্য শহীদ হন। আজকেও আমাদের মনে এইটা দগ্ধ ঘায়ের মতো জ্বলে। দেশি-বিদেশি আন্তর্জাতিক চক্রান্তে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে বিগত ২০১৫-১৬ সালে বিভিন্ন জঙ্গি হামলা ঘটানো হয়। হলি আর্টিজান হামলার পর আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যেতে থাকে।তিনি বলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুলিশ ও জনগণ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। সমস্ত উন্নয়ন সহযোগীদের স্পষ্ট বলে দেওয়া হয় আমরা বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করব, আপনারা ফিরে আসেন। তারপর আমাদের উন্নয়ন সহযোগীরা দেশে ফিরে আসেন এবং আমাদের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এর পর থেকে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা, গ্রেপ্তার করা ও বিচারে সোপর্দ করা অব্যাহত ছিল। যার ফলে সমগ্র বাংলাদেশে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি, আমরা বলব যে এইটা নিয়ন্ত্রণে আছে।

তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিজান হামলায় বিদেশিসহ মোট ২২ জন নিহত হন। এই ঘটনায় সিটিটিসি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যদিও এ ঘটনার অনেক অভিযুক্ত বিভিন্ন সময় জঙ্গি হামলা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে মারা যান। আর বাকিদের সাজা হয়ে গেছে। আমরা এখন অনেকটা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।আশা করি ভবিষ্যতে জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারব।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেএমবি, নব্য জেএমবিসহ জঙ্গিবাদ নাই বলেও চলে। তবে জঙ্গিবাদের সুপ্ত বীজ লুকিয়ে থাকতে পারে। তবে নতুন কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল।দেশের ইতিহাসে কলঙ্কজনক একটি অধ্যায় ২০১৬ সালে ১ জুলাই। সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলাটি ঘটে ওই রাতে, যার কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে পড়তে হয় ভাবমূর্তি সংকটে। ওই রাতে গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা দেশি-বিদেশি ২২ জন নাগরিককে হত্যা করে। এর মধ্যে ইতালির নয়জন, জাপানি সাতজন, ভারতীয় একজন, আমেরিকায়ন একজন, বাংলাদেশি দুইজন নাগরিক এবং দুইজন পুলিশ কর্মকর্তরা রয়েছেন। এছাড়া পুলিশ ও সেনাবাহিনী মিলে দেশি-বিদেশি মোট ৩২ জন নাগরিককে উদ্ধার করা হয়।ওই হামলার আজ সাত বছর। দিনটিতে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণে পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। প্রতি বছরের মতো আজও সকালে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিজানে নিহতদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

Advertisement