যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ জর্জ ফ্লয়েডকে হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক চৌভিন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে চৌভিন ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ পেতে পারেন।
মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে গত বছরের মে মাসে ডেরেক চৌভিনের হাতে নিহত হন জর্জ ফ্লয়েড। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। একপর্যায়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ শিরোনামে এ আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়।
মিনেসোটার হেনেপিন কাউন্টি আদালত তিনটি অভিযোগেই ডেরেক চৌভিনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এগুলো ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুন, ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুন এবং ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ নরহত্যা। আইন অনুযায়ী ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ অনিচ্ছাকৃত খুনের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের জন্য সর্বোচ্চ কারাদণ্ড হয় ২৫ বছরের। অন্যদিকে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ নরহত্যার দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার ডলার জরিমানা।
আদালত রায় ঘোষণার সময় জানিয়েছেন, পরবর্তী আট সপ্তাহের মধ্যে চৌভিনের কারাদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হবে। মার্কিন ইতিহাসে এই প্রথম কোনো শ্বেতাঙ্গ পুলিশের সাজা হল কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক হত্যার দায়ে।
রায় ঘোষণার পরপর আদালতের বাইরে থাকা ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনকারীরা উল্লাস প্রকাশ করেন। ন্যায়বিচার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
জাল নোট ব্যবহারের অভিযোগ এনে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টনের বাসিন্দা জর্জ ফ্লয়েডকে (৪৬) গত বছরের ২৫ মে আটক করে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরের পুলিশ। আটকের পর ডেরেক চৌভিন নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা ফ্লয়েডের ঘাড় হাঁটু দিয়ে সড়কে চেপে ধরেন। এ সময় ফ্লয়েড বলতে থাকেন, ‘দয়া করুন, আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমাকে মারবেন না।’ এক পথচারী ওই সময় ফ্লয়েডকে ছেড়ে দিতে পুলিশকে অনুরোধ করেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ফ্লয়েডকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। জর্জ ফ্লয়েড মিনোপোলিস শহরের একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।