জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০২১ পাস

মোবাইল ব্যাংকিং সেবার করপোরেট কর কমানো হয়েছে। শিল্পের কাঁচামাল ক্রয়ে ক্রসচেকে লেনদেনের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। শিল্প খাতে কালো টাকা বিনিয়োগে দেওয়া ‘বিশেষ’ সুযোগ অব্যাহত রাখা হচ্ছে।—এমন সব সুবিধা রেখে জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে সরকারের আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য অর্থ বিল। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মঙ্গলবার সকালের অধিবেধনে কন্ঠভোটে পাস হয় এ বিল।এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রণীত বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় অর্থবিলের ওপর কয়েকজন সদস্যের আনা কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বাকিগুলো কন্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়। পরে তিনি অর্থবিল পাশের অনুরোধ জানালে স্পিকার তা ভোটে দেন। এ সময় উপস্থিত সদস্যদের কন্ঠভোটে পাস হয় অর্থবল।জানা গেছে, ৩ জুন ঘোষিত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যমান করোনার প্রেক্ষাপটে শিল্প বিনিয়োগকে চাঙা করতে নানা কর ছাড় দেওয়া হয়। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম কর হ্রাস, এক ব্যক্তির কোম্পানির করপোরেট কর হ্রাস, আইটি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে কর অবকাশ সুবিধা এবং ভ্যাটের আগাম কর হ্রাস অন্যতম।

জানা গেছে, বিনিয়োগ সহজ এবং উৎসাহী করতে শিল্পের কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে ক্রসচেকের শর্ত শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে ৫০ হাজার টাকার বেশি কাঁচামাল কিনলে সে ক্ষেত্রে চেকে লেনদেনের বিধান চালু আছে। এটি বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। এখন থেকে ৫ লাখ টাকার কম টাকার কাঁচামাল কিনলে চেকে লেনদেনের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এতে শিল্প উদ্যোক্তারা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।বাজেট ঘোষণার পর মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথকভাবে করপোরেট কর কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আবেদন করে। এনবিআর প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে এ খাতে করপোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোবাইল ব্যাংকিং সেবার করপোরেট কর প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ করা হয়। এটি কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ১৫টি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—বিকাশ, রকেট, এম ক্যাশ, শিওর ক্যাশ, ইউক্যাশ, মোবাইল মানি, নগদ ও উপায়। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং (এমএফএস) কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।এবারের অর্থবিলে কর্মীদের বেতন পরিশোধে নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও সম্মানির পরিমাণ ১৫ হাজার টাকার বেশি হলে তা ক্রসচেক বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে করার বিধান রয়েছে। তা না হলে এই খাতে ব্যয় করা অর্থ আয় হিসাবে দেখানো হয় না। আর আয় হিসাবে গণ্য করলে তা করযোগ্য হয়ে যায়। সংশোধিত অর্থবিলে এই সীমা ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

Advertisement