ট্রাক-অটোভ্যান সংঘর্ষে ৩ শ্রমিক নিহত

গাছ কেটে জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রতিদিনের মতো ৪ জন শ্রমিকসহ অটোভ্যানটি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামের আব্দুর রহিম। কথা ছিল কাজ শেষে সবাই সিংড়া হাট থেকে বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরবেন এবং রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাবার খাবেন।কিন্তু নিয়তির কী নির্মম পরিহাস? চালক আব্দুর রহিম ও তার দুই সঙ্গী শ্রমিক বিদ্যুৎ হোসেন ও কাচু প্রামাণিককে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো। তাদের আর কখনো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হবে না।চালক আব্দুর রহিমের তিন সন্তান ও স্ত্রীর সঙ্গে বসে আর কখনো খাবার খাওয়া হবে না। একসঙ্গে ৩ জনের মৃত্যুতে কলম গ্রামজুড়ে যেন বইছে শোকের মাতম। চারিদিকের বাতাস যেন ভারি হয়ে পড়েছে।নিহত ভ্যানচালক আব্দুর রহিম কলম পুন্ডরী গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলাম ওরফে উপেন মণ্ডলের ছেলে আর শ্রমিক কাচু প্রামাণিক একই গ্রামের আব্দুল জোব্বার এবং অপর শ্রমিক বিদ্যুৎ হোসেন পার্শ্ববর্তী কলম নজরপুরের মবের আলীর ছেলে বলে জানা গেছে।ঘটনাটি সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়ার জোলারবাতা এলাকার। অটোভ্যান গাড়িটির এক্সেল ভেঙে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চালকসহ ৫ জন শ্রমিক একটি অটোভ্যানযোগে চৌগ্রামের নিমাকদমা গ্রামে গাছ কাটার জন্য যাচ্ছিল। পথিমধ্যে জোলারবাতা এলাকায় ভ্যানগাড়ির একটি চাকার এক্সেল ভেঙে মহাসড়কের উপর ছিটকে পড়ে। পরে দ্রুতগামী একটি ট্রাক তাদের উপর দিয়ে চলে যায়।এতে অটোভ্যান চালক আব্দুর রহিম (৪৭) ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর ভ্যানের ৪ যাত্রী আহত হলে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়ার পথে শ্রমিক বিদ্যুৎ হোসেন (৪২) ও কাঁচু প্রামাণিকের (৬০) মৃত্যু হয়।আহতদের মধ্যে প্রাণে বেঁচে থাকা অপর দুই শ্রমিক মাসুদ রানা (৩৫) ও এলামুল হককে (৪০) সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শিবলী নোমানী শুভ বলেন, প্রথমে ঘটনাস্থলেই ১ জনের মৃত্যু হয়। পরে গুরুতর আহত ২ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন বিষয়টি শুনেছেন। আর অপর দুজনকে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement