ট্রাম্প স্টাইলে বরিস : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পছন্দের সাংবাদিক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

ব্রিটবাংলা ডেস্ক :  ব্রিটিশ সাংবাদিকদের সঙ্গে ক্রমশ বৈরিতা বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কার্যালয় টেন ডাউনিং স্ট্রিটের কমিউনিকেশন টিমের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মতো প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রেসব্রিফিংয়ে পছন্দের সাংবাদিকদের নিচ্ছেন এবং অপছন্দের বা প্রধানমন্ত্রী বরিসের সমালোচক সাংবাদিকদের টেন ডাউনিং স্ট্রীট থেকে বের করে দিচ্ছেন। এমন ঘটনা গত সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো ঘটেছে টেন ডাউনিং স্ট্রীটে।

প্রধানমন্ত্রীর ইউরোপ বিষয়ক উপদেষ্টা ডেভিড ফ্রস্টের সাথে পোস্ট ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিটেনের বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও সেখানে যাওয়ার পর নিরাপত্তা কর্মকর্তা তালিকা চেক করে, তালিকায় যাদের নাম আছে তাদেরকে এক পাশে এবং তালিকায় যাদের নাম নেই তাদেরকে অন্য পাশে থাকার অনুরোধ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রধান গণযোগাযোগ কর্মকর্তা এসে বলেন, তালিকায় যাদের নাম আছে তারা আজকের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমন্ত্রীত। বাকীদের চলে যেতে হবে বলে জানান তিনি।

তালিকায় ফাইনান্সিয়াল টাইমস, দ্যা সান এবং টেলিগ্রাফসহ ডজনখানেক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু বিবিসিসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পলিটিক্যাল এডিটররা সেখানে উপস্থিত হলে বিপত্তি বাঁধে। কারণ টেন ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশের পাস থাকলে প্রেসব্রিফিং যে হলে হবে সেই হলে প্রবেশ করানো হচ্ছে তালিকার নাম অনুযায়ী। আর এই তালিকাটি তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রধান  কমিউনিকেশন উপদেষ্টা।

এ সময় সাংবাদিকরা দাবী করেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্রেক্সিট উপদেষ্টা একজন সরকারী কর্মকর্তা। তার বেতনও পরিশোধ হয় সরকারী অর্থে। তার প্রেসব্রিফিংয়ে পলিটিক্যাল এডিটরসহ সব সাংবাদিকরা থাকতে পারবে। বিশেষ করে পোস্ট ব্রেক্সিট বিষয়ে সবার জানার এবং শুনার অধিকার রয়েছে।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রধান গণযোগাযোগ কর্মকর্তা বলেন, কে আমন্ত্রিত হবে আর হবে না, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। যাদের আমন্ত্রীত তালিকায় নাম নেই তাদেরকে বিদায় হবার জন্যে অনুরোধ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর প্রধান গণযোগাযোগ কর্মকর্তার এমন আচরনে প্রতিবাদ করে প্রেসব্রিফিং অংশ না নিয়ে টেন ডাউনিং স্ট্রিট ত্যাগ করেন বিবিসি, আইটিভি এবং স্কাই টিভির পলিটিক্যাল এডিটরসহ মিরর, দ্যা আই, হ্যাফিংটন পোস্টসহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা বলেন, এর আগেও নন পলিটিক্যাল ব্রিফিংয়ে পলিটিক্যাল এবং নন পলিটিক্যাল সব সাংবাদিক অংশ গ্রহনের সুযোগ পেতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আমলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মতো লন্ডনেও সাংবাদিকদের সাথে আচরন শুরু করেন টেন ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা।

এর আগে গত সপ্তাহে চীনের টেক কোম্পানী হাওয়াইয়ের একটি প্রেসব্রিফিংয়েও লন্ডনে সাংবাদিকদের সঙ্গে একই আচরন করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রধান গণমাধ্যম কর্মকর্তা। সেখানে ফরেন অফিস এবং হোম অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পছন্দের বাছাই করা সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, গত সপ্তাহে বিবিসি রেডিও ফোর (৪) এবং আইটিভির গুড মরর্নিং ব্রিটেন প্রোগ্রামেও মন্ত্রীদের অংশ গ্রহন করতে বারন করেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

তবে গত সোমবারের বিষয়টি নিয়ে পার্লামেন্টে সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের এমপিরা। যদিও টেন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হয়েছে, ছোট্ট পরিসরে প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হলে আমন্ত্রিতরা ছাড়া কারো প্রেবেশের সুযোগ নেই।

 

 

Advertisement