তারেকের নির্দেশিত পথে এগুচ্ছে সিলেট জেলা বিএনপি

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। জেলা বিএনপি নেতারা সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৪টি পৌর শাখার আহবায়ক নির্ধারণ করেও ঘোষণা দিতে পারছেন না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশিত পথে এগুচ্ছেন জেলা বিএনপি নেতারা। আর সেটা বাস্তবায়ন করতে সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ডা. জাহিদ হোসেন তারেকের নির্দেশিত পথে চলতে নির্দেশনাও দিয়ে গেছেন। এতে জেলা বিএনপি নেতাদের ঠিক করা দু’চারজন আহবায়ক বাদ পড়তে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছিল গত ২ অক্টোবর। কমিটি গঠনের পর সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে তৃণমূলদের নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসে ছিলেন জেলা বিএনপির নেতারা। জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৪টি পৌর শাখার আহবায়ক চূড়ান্ত করে রেখেছিলেন তারা। কিন্তু সে তালিকা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেননি বিএনপি নেতারা। তারা বলছিলেন, আহবায়কদের সাথে সংশ্লিষ্ট শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এক সাথে ঘোষণা করবেন। সেই সাথে কাজও করছিলেন নেতারা। বিভিন্ন কমিটিতে আহবায়কদের সাথে সদস্যও প্রায় চূড়ান্ত করেছিলো জেলা বিএনপি।

কিন্তু জেলা বিএনপির ফর্মুলায় বাধা হয়ে দাঁড়ান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জেলা বিএনপি তৃণমূল নেতাদের সিলেট শহরে এনে বৈঠক করে তাদের মতামত নিয়ে বিভিন্ন কমিটি দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলেন। তাদের চূড়ান্ত করা আহবায়কদের অনেকেই সিলেট শহরে অবস্থান করায় তারেক রহমান মেনে নিতে পারেননি। এছাড়া শহরে বসে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করতে তারেকের রয়েছে মানা। দলের বেশ কয়েকটি সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

তারেক রহমান জেলা বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদ হোসেনকে কিভাবে সিলেটের কমিটি গঠিত হবে তার একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। সে লক্ষেই ডা. জাহিদ গত ১০ দিন পূর্বে পুণরায় সিলেটে এসে জেলা বিএনপি নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সূত্র জানায়, সিলেট শহরে অবস্থান করেন এমন কেউ উপজেলা কিংবা পৌর বিএনপির আহবায়ক হতে পারবেন না, তারেক রহমানের এমন সিদ্ধান্তের কথা ডা. জাহিদ জানিয়েছেন। এছাড়া সিলেট শহরে বসে কমিটি ঘোষণা না দিয়ে তৃণমূলে গিয়ে কমিটি ঘোষণা দেয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানানো হয় সেই সভায়। শুধু তাই নয়, উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলনে যিনি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হবেন তাঁকে স্ব-স্ব জায়গায় অবস্থান করতে হবে। শহরে বসে কেউ উপজেলা কিংবা পৌর কমিটির মূল দায়িত্ব নিতে পারবেন না।

কমিটি দিতে দেরী হচ্ছে কেন জানতে চাইলে, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল আহাদ খান জামাল বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন নতুন মামলায় ঢুকিয়ে সরকার আমাদের সাংগঠনিক কাজকে দমাতে চায়। তিনি বলেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করা হবে।

নতুন করে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে বাদ পড়বেন জেলা বিএনপির কয়েকটি শাখার প্রাথমিক তালিকাভুক্ত কয়েকজন আহবায়ক। কারণ এদের মধ্যে কয়েকজন নেতা সিলেট শহরে অবস্থান করেন। সুতরাং বাদ পড়ার তালিকায় এদেরকে বিবেচনা করছে জেলা বিএনপি। এদের মধ্যে রয়েছেন, জকিগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক আখতার হোসেন রাজু, পৌর শাখার আহবায়ক ইকবাল আহমদ তাপাদার, গোয়াইনঘাট উপজেলার আহবায়ক আব্দুল হেকিম, বিয়ানীবাজার উপজেলার এডভোকেট জুবায়ের। এছাড়া বাদ পড়তে পারেন ফেঞ্চুগঞ্জের ইফতেখার উদ্দিন ফেদল। কারণ, তিনি গত ইউনিয়ন নির্বাচনে সদস্য পদে পরাজিত হয়েছেন। তবে তাঁর জায়গায় অন্য কেউ উপযুক্ত না পেলে তাকেই রাখা হতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

গত ১৬ নভেম্বর জেলা বিএনপির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয় নগরীর একটি হোটেলে। সভায় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিএনপি নেতারা সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৪টি পৌরসভা বিএনপির আহবায়কের নাম চূড়ান্ত করেন। সিলেটভিউ এর কাছে কমিটির একটি তালিকা এসে পৌঁছে। সিলেটের ১৩ উপজেলা ও ৪টি পৌর কমিটির আহবায়কের নাম উল্লেখ করে সিলেটভিউতে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এসব কমিটিতে জৈন্তাপুর উপজেলায় এ বি এম জাকারিয়া, গোয়াইনঘাটে আব্দুল হেকিম, দক্ষিণ সুরমায় সিরাজুল ইসলাম, বালাগঞ্জে আব্দুর রশিদ, কোম্পানীগঞ্জে মনাফ হাজী, বিশ্বনাথে গৌছ খান, ওসমানীনগরে ফরিদ আহমদ, গোলাপগঞ্জে আব্দুল গফুর, বিয়ানীবাজারে এডভোকেট জুবায়ের, বিয়ানীবাজার পৌরসভায় নুরুল হোসেন বাবুল, জকিগঞ্জ পৌরসভায় ইকবাল আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলায় আখতার হোসেন রাজু, কানাইঘাটে আব্বাস উদ্দিন, কানাইঘাট পৌরসভায় আবিদুর রহমান, সদর উপজেলায় তারেক কালাম, ফেঞ্চুগঞ্জে ইফতেখার উদ্দিন ফেদল ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় হাসান আহমকে আহবায়ক হিসেবে চূড়ান্ত করে রেখেছিলেন বিএনপি নেতারা।

Advertisement