দুর্ভিক্ষ কবলিত মাদাগাস্কারে পঙ্গপাল খেয়ে জীবনধারণ

জলবায়ু সংকটের কারণে দক্ষিণ মাদাগাস্কার চার দশকের মধ্যে তীব্র খরার কবলে পড়েছে। চরম দুর্ভিক্ষের কারণে মাদাগাস্কারের শিশুরা পঙ্গপাল এবং ক্যাকটাসের পাতা খেয়ে জীবনধারণ করছে যা হয়তো কেউ কল্পনাতেও আনতে পারবেন না । জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির অধীনে একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে যে, এই দ্বীপরাষ্ট্রের কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ সর্বোচ্চ স্তরের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আগামী দিনে এই সংকট আরো বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জাতিসংঘ। দক্ষিণ মাদাগাস্কার চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার সম্মুখীন হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষকে খাবারের সন্ধানে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে, বাকিরা চরম জীবন সংগ্রামে নেমেছেন। তামিরি তার তিন সন্তান টোরেভেলো, (১২), এমবাহোমামি (ছয়), এবং মানেনজিনা (চার), ফান্ডিওভায় বসবাস করেন, যা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলির মধ্যে একটি। চরম ক্ষুধা মোকাবেলা করার জন্য তামিরি এবং তাঁর পরিবার পঙ্গপাল, ক্যাকটাস পাতা এবং ‘ফক্স মিমোসা’ নামে একটি উদ্ভিদ যা সাধারণত গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় সেই সব খেয়েই জীবন কাটাচ্ছেন। তামিরি জানান, ‘সকালে ছেলেমেয়েদের জন্য পোকামাকড় দিয়ে এই খাবারের প্লেট তৈরী করে আমি তাদের হাতে তুলে দিই।
এমনকি এগুলো যে ধুয়ে তাদের দেব সেই পানিটুকুও পাওয়া যায় না। আট মাস হয়ে গেছে আমি এবং আমার বাচ্চারা প্রতিদিন এই উদ্ভিদ খেয়ে চলেছি কারণ আমাদের খাওয়ার জন্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই এবং দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হবার ফলে ফসল ফলানো এখন প্রায় অসম্ভব ।”কোনোদিন এই হতভাগ্য পরিবারগুলির কপালে ক্যাকটাস ছাড়া আর কিছুই জোটে না। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বা ডব্লিউএফপি বলছে, আগামী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ ২০২২ পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় মাদাগাস্কারে জীবন রক্ষাকারী খাদ্য সরবরাহের জন্য ৭৮.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। জলবায়ু সংকটের কারণেই আজ এই নিদারুন দুর্ভিক্ষ বলে জানাচ্ছেন ডব্লিউএফপি-র সদস্য শেলি ঠাকরাল। তার মতে, ‘জলবায়ুর এই চরম সঙ্কটের জন্য যে মানুষগুলো কোনোভাবেই দায়ী নয়, তাদেরই আজ নিদারুন সংকটের শিকার হতে হচ্ছে, যা সত্যিই মেনে নেয়া যায় না।’

সূত্র: https://www.independent.co.uk

Advertisement