বাবর আজমের ক্যারিয়ার সেরা শতকে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ৩৩১ রানের চ্যালেঞ্জ জানায় পাকিস্তান। জবাবে জেমস ভিন্সের প্রথম শতকে ৩ উইকেট ও ১২ বল হাতে রেখেই সেই চ্যালেঞ্জে উতরে যায় আনকোরা ইংল্যান্ড। রেকর্ড গড়া এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো স্টোকস বাহিনী।মঙ্গলবার এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত দিবারাত্রির এ ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় ইংল্যান্ড। সিরিজজুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করা সাকিব মাহমুদ শুরুতেই ফখর জামানের উইকেট নিলেও ইমাম-উল-হক ও বাবর আজমের জুটিতে বড় রানের ভিত পায় পাকিস্তান। তাদের ৯২ রানের জুটি ভাঙে ইমাম আউট হলে। ৭৩ বলে ৫৬ রান করেন এই বাঁহাতি।
তৃতীয় উইকেটে ১৭৯ রানের জুটি গড়েন বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৫৮ বলে ৭৪ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলে রিজওয়ান মাঠ ছাড়লে শোয়েব মাকসুদ (৮), হাসান আলী (৪), ফাহিম আশরাফ (১০), শাদাব খান (০) কেউই সুবিধা করতে পারেননি।তবে এদের মাঝেও ১৫৮ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন অধিনায়ক বাবর আজম। তার ১৩৯ বলের এ ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কার মার। যা ওয়ানডেতে কোনও পাকিস্তানি অধিনায়কের সর্বোচ্চ ইনিংস। ওয়ানডেতে দ্রুততম ১৪টি সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ডও এখন বাবরের।দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলাকে (৮৪) ছাড়িয়ে সবচেয়ে কম ইনিংসে ১৪টি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন বাবর (৮১)। শেষ ওভারে আউট হয়ে যাওয়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান কেবল ১৫ রানের জন্য আমলার সবচেয়ে কম ইনিংসে চার হাজার রানের রেকর্ডটি অবশ্য ভাঙতে পারেননি। তবে ইংল্যান্ডের মাটিতে এটি তার তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি, যা পাকিস্তানিদের মধ্যে সর্বোচ্চ।আর তাতে ভর করেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৩৩১ রানের বিশাল স্কোর। ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্রাইডন কার্স ৫টি ও সাকিব মাহমুদ ৩টি উইকেট শিকার করেন। এ নিয়ে তিন ম্যাচে সিরিজের সর্বোচ্চ ৯টি উইকেট শিকার করেন সাকিব।
ওই বিশাল স্কোরের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নেমে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন ডেবিড মালান। তবে ফিলিপ সল্ট ২২ বলে ৩৭ রান ও জ্যাক ক্রাউলি ৩৪ বলে ৩৯ রান করে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিলেও দুজনেই শিকার হন হারিস রউফের। আর শাদাব খানের শিকার হয়ে অধিনায়ক বেন স্টোকস ২৮ বলে ৩২ রান করে এবং জন সিম্পসন মাত্র ৩ রান করে ফিরলে ১৬৫ রানেই ৫টি উইকেট হারিয়ে যেন খেই হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড।তবে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৯ রানের জুটি গড়ে সব আশঙ্কাই যেন দূর করে দেন জেমস ভিন্স ও লুইস গ্রেগরি। অবশ্য দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়ে এ দুজনও শিকার হন রউফের। সাজঘরে ফেরার আগে ভিন্স তুলে নেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতক, করেন ৯৫ বলে ১০২ রান। যাতে ছিল ১১টি চারের মার। আর গ্রেগরি করেন ৬৯ বলে ৭৭ রান। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬টি চার ও ৩ ছক্কায়।এ দুজনের বিদায়ে ৩০৩ রানে ৭ম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড, তবে জয়ের জন্য তখন তাদের প্রয়োজন ছিল ৩৫ বল থেকে মাত্র ২৯টি রান। যা ক্রেইগ ওভারটন (১৫ বলে ১৮ রান) ও ব্রাইডন কার্সের কল্যাণে (১১ বলে ১২ রান) ১২ বল হাতে রেখেই টপকে যায় ইংল্যান্ড।এজবাস্টনে এই প্রথম তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করে জিতল কোনও দল। ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ২৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া ছিল আগের রেকর্ড। সেইসঙ্গে দ্বিতীয় সারির দল নিয়েও তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। সঙ্গে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পেল মূল্যবান ৩০ পয়েন্ট।