ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন হত্যাকান্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের শাস্তি নিশ্চিত করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রসিকিউটর অফিসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আরএসএফের এশিয়া প্যাসিফিক ডেস্কের প্রধান ডানিয়েল বাস্টার্ড। আরএসএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের শিল্প এলাকায় ক্রিমিনাল কর্মকান্ড নিয়ে রিপোর্ট করেছিলেন ইলিয়াস হোসেন। তার ওই রিপোর্টের ফলে স’ানীয় গ্যাংয়ের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার বন্দর এলাকায় রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে রক্তাক্ত অবস’ায় ইলিয়াস হোসেনকে পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। দ্রুত তাকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ৯টায় তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ইলিয়াস হোসেনের পরিবার মনে করে, স’ানীয় গ্যাংদের ক্রিমিনাল কর্মকান্ড, বিশেষ করে মাদক ও অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে ‘দৈনিক বিজয়’ পত্রিকায় রিপোর্ট লেখার কারণে খুন করা হয়েছে তাকে। তার ওই রিপোর্টের কারণে গ্রেপ্তার করা দুই ভাই তুষার ও তুর্য মিয়াকে জামিন দেয়া হয়েছে।
ডানিয়েল বাস্টার্ড বলেছেন, ইলিয়াস হোসেনকে নৃশংসভাবে হত্যা যেন শাস্তির বাইরে না থাকে তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে তদন্ত করতে আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রসিকিউটর অফিসের প্রতি আহ্বান জানাই। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের জন্য চরম ভয়াবহ পরিসি’তি বিরাজমান। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উচিত সাংবাদিকদের জন্য কার্যকর নিরাপত্তামুলক মেকানিজম সৃষ্টি করা।
ওদিকে ঢাকা থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পূর্বে কুমিল্লার মুরাদনগরে স’ানীয় একজন কর্মকর্তার দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট করেন দৈনিক সমকালের সাংবাদিক শরিফুল আলম চৌধুরী। এরপর ৪ঠা জুলাই স্টিলের বার দিয়ে পিটিয়ে ১০ জন দুর্বৃত্ত প্রায় মেরেই ফেলেছিল তাকে। ওদিকে গত ডিসেম্বরে উত্তরের জেলা জামালপুরে স্টিলের বার দিয়ে প্রহার করে হত্যা করা হয় আরেক পত্রিকার সাংবাদিক শেলু আকন্দকে। আরএসএফের হিসাবমতে, এ বছর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৬ জন সাংবাদিক ভয়াবহ সহিংসতার শিকারে পরিণত হয়েছেন। উল্লেখ্য, আরএসএফের ২০২০ ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস’ান ১৫০তম।