ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিদায়ী স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘টাকা-পয়সা দান-দক্ষিণার প্রয়োজন নেই। এখন প্রয়োজন হচ্ছে প্রবাসের মেধা ও অভিজ্ঞতা মাতৃভূমির জন্যে নিয়োজিত করা। প্রবাস প্রজন্মকে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণে আকৃষ্ট রাখা। তাহলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান উন্নয়ন কর্মকা্ল ত্বরান্বিত হবে।’
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের প্রতি এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মোমেন।
নভেম্বরের মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসাবে যোগদানের জন্য শিগগির নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন রাষ্ট্রদূত মোমেন। তাকে বিদায় ও শুভেচ্ছা জানাতে যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধান এবং ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। আমরা কূটনৈতিক পর্যায়ে দেন-দরবার অব্যাহত রেখেছি। একইসঙ্গে প্রবাসীরাও যদি নিজ নিজ এলাকার সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতনামা থিঙ্কট্যাংক, মানবাধিকার সংস্থা, সুশীল সমাজের সঙ্গে দেন-দরবার চালান তাহলে বিষয়টি ত্বরান্বিত হবে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আর্মেনিয়ার গণহত্যা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে একটি রেজ্যুলেশনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, টানা লবিংয়ের সুফল হিসেবে ২৯ অক্টোবর কংগ্রেসে একটি বিল পাশ হয়েছে বর্বরতার ১০৪ বছর পর। আমাদেরও ধৈর্য হারালে চলবে না। সভা-সমাবেশের পাশাপাশি পাকিস্তানি হায়েনাদের বর্বরতার আলোকে সিনেমা তৈরি করা যেতে পারে। নাটক ও নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ করা যেতে পারে। তাহলে জনমত জোরদার করা সহজ হবে।
প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা এবং নিউইয়র্কে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রতিষ্ঠার দাবি সম্পর্কেও তিনি অবহিত এবং যুক্তরাষ্ট্রে ঘাপটি মেরে থাকা বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের ফিরিয়ে নেয়ার ইস্যুটিও তার জানা আছে। তাই সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনকালে এসব বিষয় গুরুত্ব পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসারের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের শহীদ সদস্যসহ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে। এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আব্দুল কাদের মিয়া, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বারী, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের আন্তর্জাতিক নারীবিষয়ক সম্পাদিকা সবিতা দাস এবং যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উভয় সংগঠনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনকে ফুলেল শুভেচ্ছার পর সম্মানসূচক ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম ফজলুল হক, আবুল বাশার চুন্নু, ফারুক হোসেন, খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, মিজানুর রহমান চৌধুরী, আব্দুল আওয়াল প্রমুখ।
এছাড়া বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরো ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরএলাহি মিনা, মূলধারার রাজনীতিক খোরশেদ খন্দকার, জয় চৌধুরী, রিয়েল এস্টেট এক্সিকিটিভ নিলুফা শিরীন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতা হাজী জাফরউল্লাহ, আলিম খান, শুভ রায়, আশরাফ হোসেন লিটন, উইলি নন্দি, ফাহাদ সোলায়মান, এ টি এম মাসুদ, নাজিম উদ্দিন, এটিএম আলম, সাহাবউদ্দিন চৌধুরী লিটন, শাহ জে. চৌধুরী, কানু দত্ত, আবুল কাশেম, কমিউনিটি লিডার শাহাদত্ হোসেন, রিজুু মোহাম্মদ, শাহ ফারুক প্রমুখ।