জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে আমাদের তথ্য লিক (ফাঁস) হয়নি। তবে ১৭১টি পার্টনারের সহযোগিতায় আমরা কাজ করি। তাদের মাধ্যমে তথ্য ফাঁস হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখবো। কারও মাধ্যমে যদি তথ্য ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাই তবে তার কাছ থেকে সার্ভিস বন্ধ করে দেবো।রোববার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনআইডি ডিজি এসব কথা বলেন।ডিজি বলেন, যারা আমাদের কাছ থেকে সার্ভিস নেয় তাদের কারো কাছ থেকে এটা হতে পারে। যাদের কাছ থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে, আমরা তদন্ত করে সেই প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করে, তাদের সার্ভিস বন্ধ করে দেব এবং আমরা চুক্তি বাতিল করব।
এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ হাতে পেলে সেই অনুযায়ী কাজ করব। হাইকোর্টের নির্দেশনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। আমরা আমাদের সাইটে অ্যাবনরমাল হিট পাইনি। আমাদের সার্ভার পাবলিক প্রপার্টি নয়, এটা নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব সম্পদ। এখানে কেউ চাইলেই কিছু লিখতে বা নিতে পারে না।তিনি আরও বলেন, এনআইডি সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। নিয়মিত মনিটরিং করি কী পরিমাণ হিট আসছে। ১৭১টা পার্টনার সার্ভিস নিরাপদভাবে কাজ করছে। গতকাল নিউজ দেখার পর কাজ শুরু করেছি। এখানে একটা সাইট দুর্বল পাওয়া গেছে। তবে মাথাব্যথা হলে মাথা কাটবো না। এর সমাধান করবো, যাতে করে নাগরিক সেবা ঝুঁকিপূর্ণ না হয়।সংবাদ সম্মেলনে সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, এনআইডির সার্ভার হ্যাক হয়নি। সেবা নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভার হ্যাক হতে পারে। এনআইডি সার্ভারে কোনো থ্রেট নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগরিকের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায় সাইবার ইউনিট কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কেউ সহায়তা করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সাইবার ইউনিট এ বিষয়ে কাজ করছে। আমাদের আগে দেখতে হবে কী ফাঁস হয়েছে। সেগুলো উদ্ধার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ এ বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ইমেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত হয়ে আছে ইন্টারনেটে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মারকোপাওলোস এ তথ্য জানান।