পদত্যাগের পর মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: পদত্যাগের পরপরই দেশত্যাগ করে মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। গত মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দেশব্যাপি বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর চাপের মুখে সোমবার পদত্যাগ করেছেন তিনি। এক টুইটে দেশত্যাগ নিয়ে তিনি বলেন, বলিভিয়া ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে। তবে তিনি আরো শক্তিশালী ও উদ্যমী হয়ে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারসেলো এবরার্ড সেখানে মোরালেসের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।

খবরে বলা হয়, মোরালেস দেশত্যাগের পরপর সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের একাধিক সংঘর্ষ ঘটেছে। এমতাবস্থায় পুলিশকে সহযোগিতা করতে সেনাদের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার উইলিয়ামস কালিম্যান।দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

সোমবার এক ঘোষণায় নিজের সমর্থকদের প্রতি, যারা তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে তাদের গ্রহণ না করার আহ্বান জানান মোরালেস। তার পদত্যাগের পেছনে সেনাবাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন দেশটির সিনেটের উপ-প্রধান। তার অধীনেই নতুন নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
এদিকে, মেক্সিকো মোরালেসকে গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে গ্রহণের ঘোষণা দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবরার্ড।

প্রসঙ্গত, রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন মোরালেস। তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন সম্প্রতি নির্বাচিত সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও। অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি ঘিরে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। এমতাবস্থায় মোরালেসকে পদত্যাগের আহ্বান জানায় সেনাবাহিনী। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববার তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদত্যাগ করলাম।

২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মোরালেস। লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত তিনি। টানা তিন বার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার শাসনামলে দেশটিতে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। গত মাসের ২০ তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো লড়ে জয়ী হন তিনি। যদিও দেশে এক গণভোটে নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে, কোনো প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ তিন বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তার এমন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি দেখা দেয় জনগণের মাঝে।

Advertisement