ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সেতুর আর্থিক অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ।’ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া-১ এর ভিজিটরস সেন্টারে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে। পদ্মা নদী খুব দুর্বোধ্য একটি নদী। এখানে একইসঙ্গে তীব্র স্রোত থাকে এবং প্রচুর পলি বহন করে। এতে করে স্প্যানগুলো সহজে বসানো সম্ভব হয় না। ফলে শিডিউল অনুযায়ী কাজ শেষ করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূল সেতুর সবকটি পাইল ড্রাইভিং এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩২ টি পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১৯টি পিয়ারের কাজ চলমান আছে। মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে মাওয়া সাইটে এসেছে ৩১টি। এরমধ্যে ১৪টি পিয়ার স্থাপন করা হয়েছে। ১৫তম স্প্যান বসানোর জন্য পিয়ার ২৩-২৪ এর কাছে অবস্থান করছে। চারটি স্প্যান কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে আছে ও একটি চর এলাকায় ২৮ নম্বর পিয়ারের কাছে রাখা আছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘রেলওয়ের জন্য ২হাজার ৯৫৯টি প্রিকাস্ট স্ল্যাব প্রয়োজন হবে। এরমধ্যে ২৮৯১টি স্ল্যাব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি স্ল্যাব আগামী নভেম্বরে তৈরি শেষ হবে। রেলওয়ে স্ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে ৩৬১টি। অন্যদিকে, ২৯১৭টি প্রিকাস্ট রোডওয়ে ডেক স্ল্যাবের মধ্যে ১৫৫৩টির কাজ শেষ হয়েছে এবং ৫৪ টি স্থাপন করা হয়েছে। মূল সেতুর কাজের চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ৯ হাজার ২০১ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা।’
অন্যদিকে, নদী শাসনের বাস্তব কাজের ৬৩ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান। নদী শাসন কাজের আর্থিক অগ্রগতি ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ। মোট ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ৬ দশমিক ৬০ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদী শাসন কাজের চুক্তিমূল্য ৮ হাজার ৭০৭ দশমিক ৮১ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৪ হাজার ৩৮৮ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সংযোগ সড়কের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, পদ্মা সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পতিত থাকা কিছু জমিতে সেনাবাহিনীর ডেইরি ফার্ম করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘সেতু প্রকল্পের একখণ্ড জমি আছে যেটা সেতু প্রকল্পের কাজে লাগবে না। জমিটা পতিত না রেখে সেনাবাহিনীর ডেইরি ফার্ম করা হবে। সেখানে দুধ ও মাংস উৎপাদন হবে। গবাদি পশুর প্রজনন ও জাত উন্নয়ন হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। জাতীয় অর্থনীতির জিডিপিতে ভূমিকা রাখবে।’
এ সময় মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মো. জায়েদুল আলম পিপিএম বারসহ পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।