পরপর পাঁচবার ভূমিকম্পে সিলেটে আতঙ্ক, ৭ দিন সতর্ক থাকার আহ্বান

একদিনে মাত্র ৫ ঘন্টার মধ্যে ছয়বার ভূমিকম্পে সিলেট জুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এত কম সময়ের মধ্যে কয়েক দফা ভূ-কম্পন সহজভাবে নেয়ার বিষয় নয়। তাই আগামী সাতদিন নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহবান জানান সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পূরকৌশল বিভাগের বিশেষজ্ঞরা।শনিবার (২৯ মে) সকালে প্রথম দফা অনুভূত হয় ১০টা ৩৬ মিনিট থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ছয়বার ভূমিকম্প হয়। এসময় অফিস-আদালতে থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।বাংলাদেশ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র বলছে, কয়েক দফা এমন ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এর মাত্রা রিক্টার স্কেলে সর্বোচ্চ ৪.১। এর কেন্দ্রস্থল সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতের আসামে বলে জানিয়েছেন ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র ঢাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম।শনিবার সকালে প্রথম দফা অনুভূত হয় ১০টা ৩৬ মিনিটে। ভূমিকম্পের সময় অনেককেই কর্মস্থল থেকে বের হয়ে খোলা স্থান ও সড়কে চলে আসতে দেখা যায়। এ কম্পনের রেশ কাটতে না কাটতেই ১০টা ৫০ মিনিটে ফের কেঁপে ওঠে সিলেট। এরপর সকাল সাড়ে ১১ টায় ও ১১ টা ৩৪ মিনিটে দুটি ভূ-কম্পন অনুভূত হলে সিলেটজুড়ে মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। তবে এখন পর্যন্ত কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।সবশেষ বড় ঝাঁকুনি অনুভূত হয় বেলা ২টায়। ঘন ঘন এমন ঝাঁকুনিতে বিশেষ করে নগরীর উঁচু ভবনে থাকা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী- রিখটার স্কেলে ১০.৩৬ মিনিটে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩। ১০.৫০ মিনিটে ভূমিকম্পের মাত্রা ৪.১। এরপর ১১.৩০ মিনিটে হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ২.৮। এছাড়া ১১টা ৩৪ মিনিটের ভূমিকম্পের মাত্রা ২ এর নিচে হওয়ায় সেটা গননায় নেয়া হয়নি। এছাড়া বেলা ১টা ৫৮ মিনিটে ফের ৪ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়। এরপর সোয়া ২টার দিকে আবারও ভূমিকম্প হলেও সেটা রিখটার স্কেলে ২ মাত্রার নিচে হওয়ায় গণনায় নেয়নি আবহাওয়া অধিদপ্তর।সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট অঞ্চলে এবং এর বিস্তার ১৩ কিলোমিটার। সিলেট ভারতের সীমান্তবর্তী ডাউকি প্লেটের খুব কাছাকাছি হওয়ায় বড় ধরনের ঝুঁকিতে উত্তরপূর্বের এই জনপদ। এমন বাস্তবতায় তিনি সবাইকে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরীর আহবান জানান।এ বিষয়ে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম জানান,পর পর এতোবার ভূমিকম্প সিলেট অঞ্চলের পাশেই ডাউকি ফল্ট অঞ্চলের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।এত কম সময়ের মধ্যে কয়েক দফা ভূ-কম্পন হওয়ায় আগামী সাতদিন নগরবাসীকে সচেতন থাকার আহবান জানান তিনি।সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানালেন, সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের সমন্বয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের পাশাপাশি অলিগলির সড়কগুলো প্রসস্ত করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এসময় পাশাপাশি বিল্ডিং মেনে বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়ে আরো কঠোর হওয়ার কথা জানান নগরপিতা আরিফ।

Advertisement