ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি।মার্কিন সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও এ চুক্তি রক্ষায় ইউরোপ কোনো ভূমিকা রাখেনি।
যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন বিজয় লাভের পর ইউরোপ এখন পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে।
পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে বার্লিনে জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো ম্যাস আশা প্রকাশ করে বলেন, আমেরিকায় ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে বৈঠকে তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একইসঙ্গে পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি বাস্তবায়ন এবং চুক্তি লঙ্ঘন না করার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপের এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এমন সময় ইরানকে পরমাণু সমঝোতা মেনে চলার আহ্বান জানালো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও এটিকে রক্ষায় ইউরোপ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন একতরফা নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কমিয়ে আনতেও ইউরোপ ইরানকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি।
অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশেষ করে ইউরোপের এই তিনটি দেশ বহুবার এটা স্বীকার করেছে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় পরমাণু সমঝোতার বিরাট গুরুত্ব রয়েছে এবং এ কারণে যেকোনো মূল্যে এটিকে টিকিয়ে রাখা উচিত।
যাইহোক, পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপের অবস্থান থেকে বোঝা যায় ইরানের ব্যাপারে তারা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা বাস্তবায়নের সৎসাহস বা যোগ্যতা তাদের নেই। তারপরও ইউরোপের এই তিন দেশের কর্মকর্তারা প্রায়ই পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করে এবং এভাবে তারাও পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে এক ধরনের বাধা সৃষ্টি করছে।
অথচ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র প্রতিবেদনে বহুবার বলা হয়েছে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টা করছে না এবং ইউরোপ প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ার পর ইরান নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কমিয়ে দেয়ার আগ পর্যন্ত তেহরান পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলেছে।