র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তার প্রধানকে যুক্ত করা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটা ঢং। র্যাব এবং এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক।শনিবার সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, যে কোনো অভিযোগ তথ্যভিত্তিক হওয়া উচিত। ১০ বছরে ৬০০ লোক মারা গেছেন, তা ঢালাওভাবে বলা ঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, যেখানে পরিপক্ব গণতন্ত্র রয়েছে, তাদের কাছ থেকে এমন ঢালাও অভিযোগ কাম্য নয়। কারণ, তাদের দেশে প্রতিবছর ছয় লাখ লোক নিখোঁজ হন।এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার পরিপেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারকে তলব করেছে বাংলাদেশ।পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন শনিবার আর্ল মিলারকে তলব করেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ছয় কর্মকর্তা হলেন-চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক), বেনজির আহমেদ (সাবেক র্যাব মহাপরিচালক, জানুয়ারি ২০১৫-এপ্রিল ২০২০), খান মোহাম্মদ আজাদ (বর্তমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স), তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, জুন ২০১৯-মার্চ ২০২১), মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, সেপ্টেম্বর ২০১৮-জুন ২০১৯) এবং মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, এপ্রিল-২০১৬- সেপ্টেম্বর ২০১৮)।বিবিসি বাংলা জানায়, শুক্রবার মার্কিন অর্থ দপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের এই দিনে (১০ ডিসেম্বর, শুক্রবার) মার্কিন অর্থ দপ্তরের ফরেন অ্যাসেটস কনট্রোল অফিস (ওএফএসি) বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে- যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তালিকাভুক্তদের অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশের র্যাবের ছয়জন কর্মকর্তা।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। আইনের শাসন, মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হেয় করার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলছে।