ইন্দোনেশিয়ার অশান্ত প্রদেশ পাপুয়ার গোয়েন্দাপ্রধানকে হত্যার জেরে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গত মঙ্গলবারের ওই অভিযানে অন্তত ৯ বিদ্রোহী এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। পাপুয়া পুলিশের মুখপাত্র আহমাদ মুস্তফা কামাল বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত রোববার পাপুয়ার গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান জেনারেল ই গুস্তি পুতু দানি কারইয়া নুগরাহাকে হত্যা করে বিদ্রোহীরা। পরদিন সেখানে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদো।বিদ্রোহীদের মুখপাত্র সেব্বি সামবোম গোয়েন্দাপ্রধান নুগরাহারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে তাঁদের কেউ নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেননি তিনি।পুলিশের পক্ষ দেওয়া ওই তথ্যকে ‘বড় ধরনের মিথ্যাচার’ ও ‘অপপ্রচার’ আখ্যায়িত করেছেন বিদ্রাহীদের মুখপাত্র। তবে পাপুয়া পুলিশের মুখপাত্র মুস্তফা কামাল বলেছেন, তাঁরা ‘অপরাধীদের’ অবস্থান নিশ্চিত হয়েই পুনচাকে ওই অভিযান চালিয়েছেন। সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ সময় তাঁদের আরও দুই কর্মকর্তা আহতও হয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ পাপুয়ার সীমান্ত রয়েছে পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই দ্বীপ ছিল নেদারল্যান্ডসের উপনিবেশ। ১৯৬১ সালে তারা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়। দুই বছর পর প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া এই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে থাকার পক্ষে রায় আসে। তবে এই ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে পাপুয়ার জাতিসত্তা মেলেনেশিয়াদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ চলে আসছে। এমনকি তাদের হাতে অধিকারকর্মী এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীরাও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।সাম্প্রতিক সময়ে পুনচাক জেলায় বিদ্রোহীদের হাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। বিদ্রোহীরা সেখানে কয়েকটি স্কুল ও একটি হেলিকপ্টারে অগ্নিসংযোগও করেন। এরপর থেকেই সেখানে সামরিক অভিযান বৃদ্ধি করেছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। এসব হামলার জন্য পাপুয়ার স্বাধীনতার দাবি করা সংগঠন ‘ফ্রি পাপুয়া অর্গানাইজেশন’–এর সামরিক শাখা ওয়েস্ট পাপুয়া লিবারেশন আর্মিকে দায়ী করা হচ্ছে।