বলিউড তারকাদের চোখে ছাত্র আন্দোলন

ব্রিট বাংলা ডেস্ক :: রাজনীতি নিয়ে বলিউড তারকারা সাধারণত মাথা ঘামান না। এ নিয়ে তারা প্রকাশ্যে তেমন কোনো বিবৃতিও দেন না। কিন্তু জামিয়া মিলিয়া ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের দমনপীড়নের পর তাদের অনেকেই মুখ খুলেছেন। কেউ কেউ এর কড়া সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে আছেন খ্যাতনামা অভিনেতা, অভিনেত্রী। অভিনেত্রী দিয়া মির্জা বলেছেন, সারাদেশে ছাত্র বিক্ষোভ আমাদের গণতন্ত্রে একটি ‘টিপিং পয়েন্ট’। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের টেনে নেয়া হচ্ছে, প্রহার করা হচ্ছে, এই দৃশ্য ভোলা কঠিন হবে। এই তরুণ শিক্ষার্থীরা সেই জিনিসটিই করছেন, যা আমাদের করা উচিত ছিল তাদের জন্য।

আমরা যে আদর্শ, নীতি ধারণ করি তা সমুন্নত রাখা থেকে এসব শিক্ষার্থীদের জোর প্রয়োগ করে বাধা দেয়া হয়েছে। তাই আমি এসব শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আসুন আমরা ভারতের আদর্শ রক্ষার জন্য ঐকবদ্ধ হই।

ওদিকে হনসাল মেহতা বলেন, ভারত জ্বলছে। নিষ্পেষণ, দমন ও যেকোনো সহিংসতার নিন্দা জানাতেই হবে। এটা হতে হবে অহিংস প্রতিবাদ, অসহযোগের মাধ্যমে। আমি ওই সব সাহসী মানুষদের স্যালুট জানাই, যারা নির্যাতনের ভয়কে উপেক্ষা করে কণ্ঠস্বর জোরালো করেছেন।
রিতেশ দেশমুখ বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সঙ্গে আমি সংহতি প্রকাশ করি। তবে আমি কোনো রকম সহিংসতা সমর্থন করি না। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে আমরা সব সময়ই গর্বিত। কিন্তু এবার তাদেরকে আরো সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত ছিল পরিস্থিতি মোকাবিলায়। আমাদের শিক্ষার্থীরা এমন আচরণ আশা করতে পারেন না।

সিদ্ধার্থ মালহোত্রা বলেন, দিল্লিতে সব শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার হৃদয়ের অনুভূতি। আমাদের মতো একটি গণতন্ত্রে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাধ্যমে নাগরিকদের প্রতিবাদ জানানোর বিরুদ্ধে এমন সহিংসতা দুঃখজনক। আমার দেশে কোনো রকম সহিংসতারই স্থান থাকা উচিত নয়। এই আচরণের কড়া নিন্দা জানাই আমি।
অলঙ্কৃতা শ্রীবাস্তব বলেন, আমি জামিয়াতে পড়াশোনা করেছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তার পক্ষ নেয়ার কিছুই নেই। শিক্ষার্থীর চত্বরে, শিক্ষার্থীদের হোস্টেলে আগ্রাসী প্রবেশ করে ভেঙে দেয়া হয়েছে পা, নষ্ট করা হয়েছে চোখ। অন্ধকারে করা হয়েছে অপমান। ইতিহাস এ কথা স্মরণে রাখবে।

অভয় দেওল বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের সম্পদ। তাদের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত আমাদের। আমি আশা করি শুভ বুদ্ধির উদয় হবে শিগগিরই। দেশ তার নিজের ভিতরে যুদ্ধ করতে পারে না। আপনি আগুনের সঙ্গে আগুন নিয়ে যুদ্ধ করতে পারেন না।
মনোজ বাজপাই বলেন, এমন একটি সময় হয়তো আসবে যখন আমরা অন্যায়ের প্রতিরোধ করার শক্তি হারিয়ে ফেলবো। কিন্তু এমন সময় কখনোই আসা উচিত নয়, যখন আমরা প্রতিবাদ করতে ব্যর্থ হবো। প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার নিন্দা জানাই আমি।

জয়া আখতার বলেন, এই শিক্ষার্থীরা আমাদের জন্য লড়াই করছেন। তাদের জন্য আমাদের লড়াই করা উচিত। কঙ্কনা সেনশর্মা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। দিল্লি পুলিশের প্রতি লজ্জা। ওদিকে সুধীর মিশ্র বলেন, ১৯৮৭ সালে আমি একটি ছবি নির্মাণ করেছিলাম। এর নাম ‘ইয়ে য়ো মানজিল তো নেহি’। এ ছবিটি ছিল ছাত্র রাজনীতি নিয়ে। ক্যাম্পাসে পুলিশের প্রবেশ এবং শিক্ষার্থীদের নৃশংসভাবে প্রহারের ক্লাইম্যাক্স দেখে মনে হচ্ছে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় নি। অন্যদিকে বিশাল ভারধওয়াজ বলেন, জামিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য আমার হৃদয়ে বেদনা অনুভব করছি। নীরব হইও না। সহিংস হবে না। অন্যদিকে জাভেদ আখতার বলেন, অনুমতি ছাড়া জামিয়া ক্যাম্পাসে প্রবেশের মাধ্যমে পুলিশ এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় হুমকিতে।

ওদিকে অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া বলেছেন, ভুলে যান নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের কথা, যখনই আমাদের নাগরিকরা তাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটাতে যান তখনই এমন ঘটনা ঘটে। আমাদের একটি বিল পাস করানো উচিত। তাতে আমাদের দেশকে আর গণতান্ত্রিক বলা উচিত না। মনের কথা বলার অপরাধে নিরপরাধ মানুষকে প্রহার করা হবে? বারবারিক।

হুমা কুরেশি বলেন, এটা অবাস্তব। আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের দেশ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ যা করেছে তা ভয়াবহ। অন্যদিকে অনুরাগ কাশ্যাপ বলেন, অনেক বেশি হয়ে গেছে। আর নীরব থাকা যাবে না। এই সরকার পরিষ্কারভাবে ফ্যাসিস্ট। আয়ুষ্মান খুরানা বলেন, শিক্ষার্থীরা যা করেছে তাতে আমি গভীরভাবে বিরক্ত। এর নিন্দা জানাই। মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার আমাদের সবার আছে। কিন্তু বিক্ষোভ সহিংস হতে পারে না। জনসম্পত্তির ধ্বংস করা যাবে না। এটা গান্ধীর দেশ। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে অহিংসা ব্যবহার করতে হবে। গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকতে হবে। আরও অনেক তারকা তাদের মত প্রকাশ করলেও এখনও কথা বলেন নি বিগ বি অমিতাভ বচ্চন।

Advertisement