বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্ব অঙ্গনে ছড়িয়ে দিন: প্রধানমন্ত্রী

ব্রিট বাংলা ডেস্ক : বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্ব অঙ্গনে আরও ছড়িয়ে দেয়ার ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা বাঙালি। আমাদের সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতে আরও ছড়িয়ে পড়ে, সে ব্যাপারে বিশেষ মনযোগ দিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক -২০১০ বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্যান্য ভাষা শেখার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু নিজস্ব ভাষা (মাতৃভাষা) ভুলে যাওয়া উচিত নয়। অনেক মানুষকে অনেক কারণে বিদেশে থাকতে হয়। কিন্তু তাদের সর্বদা মাতৃভাষাকে সম্মান করতে হবে।’

‘একুশ (২১ শে ফেব্রুয়ারি) আমাদের মাথা নত না করা শিখিয়েছে। একুশ আমাদের আত্মসম্মানবোধ শিখিয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির রক্তপাতের কারণে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একুশ আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবময় দিন। আমরা চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই গৌরবময় ইতিহাসটি জানুক।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার চায় বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে উঠুক। ‘আমরা বাঙালি। আমরা বাঙালি হয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাব।’

এর আগে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানের মাঝে একুশে পদক-২০২০ বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য এবছর আমিনুল ইসলাম বাদশা (মরণোত্তর) একুশে পদকের জন্য নির্বাচিত হন। সংগীতে অবদান রাখায় ডালিয়া নওশিন, শঙ্কর রায় ও মিতা হক এবং মো. গোলাম মোস্তফা খান, এস এম মহসীন ও অধ্যাপক শিল্পী ফরিদা জামান যথাক্রমে নৃত্য, অভিনয় ও চারুকলায় অবদানের জন্য পদক পান। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখায় হাজী আক্তার সরদার (মরণোত্তর), আব্দুল জব্বার (মরণোত্তর) ও ডা. আ আ ম মেসবাহহুল হক (মরণোত্তর) পদকের জন্য মনোনীত হন।

সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ (আলী ওয়াজেদ জাফর) একুশে পদক পান। ড. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ ক্বারী আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণায় এবং শিক্ষায় একুশে পদক পেলেন অধ্যাপক বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া।

অধ্যাপক ড. শামসুল আলম এবং সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান যথাক্রমে অর্থনীতি ও সমাজসেবায় এবারের একুশে পদকের জন্য মনোনীত হন। ড. নুরুন নবী, সিকদার আমিনুল হক (মরণোত্তর) এবং বেগম নাজমুন নেসা পিয়ারি ভাষা ও সাহিত্যে অন্যদিকে চিকিৎসায় অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার পদক পান।

পদক বিজয়ীদের প্রত্যেকে একটি করে স্বর্ণপদক, সনদ এবং ২ লাখ টাকা করে দেয়া হয়।

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পুরস্কারপ্রাপ্তদের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাগত বক্তব্য দেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিদেশি কূটনীতিক, সাহিত্যিক, কবি, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাংবাদিক, বিগত বছরে একুশে পদক বিজয়ী এবং উচ্চপদস্থ বেসামারিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি একুশে পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Advertisement