বায়ুদূষণে আজ বাংলাদেশ শীর্ষে

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশের তালিকায় ১১৭ দেশের মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। আর ৬ হাজার ৪৭৫টি শহরের মধ্যে বায়ু দূষণে ঢাকার অবস্থান ২৮তম।মঙ্গলবার (২২ মার্চ) প্রকাশিত ‘বিশ্বের বায়ুর মান প্রতিবেদন-২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আইকিউএয়ার’।প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে একটি দেশও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রত্যাশিত বায়ুমান বজায় রাখতে পারেনি; আর দূষণের মাত্রার বিচারে সবার উপরে রয়েছে বাংলাদেশের নাম।

আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন বলছে, সমীক্ষার প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শহরের মধ্যে মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ শহরের বাতাসে ২০২১ সালে ডব্লিউএইচও প্রত্যাশিত বায়ুমান পাওয়া গেছে। আর ৯৩টি শহরে পিএম২.৫ এর মাত্রা ছিল ওই গ্রহণযোগ্য মাত্রার ১০ গুণ বেশি।বাংলাদেশের বাতাসে পিএম২.৫ এর গড় পরিমাণ ছিল ৭৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা সমীক্ষার ১১৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই হিসেবে গতবছর বিশ্বে বাংলাদেশের বাতাসই ছিল সবচেয়ে দূষিত।সাতটি দেশে এই পরিমাণ ছিল ৫০ মাইক্রোগ্রামের বেশি, যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ পাকিস্তান তালিকার তৃতীয় (৬৬ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম) এবং ভারত তালিকার পঞ্চম (৫৮ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম) অবস্থানে রয়েছে।আইকিউ এয়ার ২০১৮ সাল থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ আসছে এবং প্রতিবারই বাংলাদেশ দূষিত দেশের তালিকায় প্রথম দিকে থাকছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় বাংলাদেশের ঢাকার অবস্থান ২৮তম। ঢাকায় দূষণ তুলনামূলক কম হওয়ার বড় কারণ ছিল গতবছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মহামারীর লকডাউন।রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর নয়াদিল্লি (ভারত)। দূষিত বায়ুর শীর্ষ ১০ রাজধানী শহরের মধ্যে নয়াদিল্লির পরে রয়েছে ঢাকা (বাংলাদেশ), এনজামেনা (চাদ), দুশানবে (তাজিকিস্তান), মাসকট (ওমান), কাঠমান্ডু (নেপাল), মানামা (বাহরাইন), বাগদাদ (ইরাক), বিশকেক (কিরগিজস্তান) ও তাশখন্দ (উজবেকিস্তান)।আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে দূষিত ৫০টি শহরের মধ্যে ৪৬টিই মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার।প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুদূষণ এখন বিশ্বের বৃহত্তম পরিবেশগত স্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত।বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়। হাঁপানি, ক্যানসার, হৃদরোগ, ফুসফুসের অসুখসহ অনেক রোগের কারণ বায়ুদূষণ। এ রোগ বৃদ্ধির জন্যও বায়ুদূষণ দায়ী। বায়ুদূষণের দৈনিক অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা মোট বিশ্ব উৎপাদনের ৩ থেকে ৪ শতাংশ। বায়ুদূষণ তাদেরই বেশি প্রভাবিত করে, যারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

Advertisement