সদ্য বিদায়ী বছরে প্রবাসী আয়ে বড় উল্লম্ফন ঘটেছে। পুরো বছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলারের আয় পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালে এসেছিল ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ডলার। সেই হিসাবে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসী আয়ে ২ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান, ডিজিটাল হুন্ডি বন্ধের উদ্যোগ ও ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমায় বৈধ পথে আয় আসা বেড়েছে। আবার প্রবাসী আয় বিতরণে মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার বেড়েছে। সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে চলতি বছরে আয় ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে আয় এসেছে ১৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আয় এসেছিল ১২০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ফলে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে গত ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
গত বছর সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া বলেন, ‘প্রবাসী আয় বাড়াতে আমাদের ২৪ জন কর্মকর্তা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। আবার এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবে আয় এলে অতিরিক্ত ১ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে আয় আসা বেড়েছে।’
বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়াতে চলতি অর্থবছরে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। সেই অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে প্রবাসীরা ১০০ টাকা দেশে পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। গত আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নিয়ে নীতিমালা জারি করে। এতে বলা হয়, ১ হাজার ৫০০ ডলারের কম আয় এলে কোনো নথি ছাড়াই প্রণোদনা পাওয়া যাবে।
আবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দিনে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রবাসী আয় উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রবাসী আয় বিতরণ সহজ করতে বিকাশ, রকেটের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠাগুলোকে এ সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অনেক ব্যাংক ও রেমিট্যান্স বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমেও আয় বিতরণ করে থাকে।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে শ্রম অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি, ২০১৯: সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে অভিবাসন বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) বলছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৬ লাখ ৪ হাজার ৬০ জন বাংলাদেশি কর্মী বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়েছে। তবে কর্মী পাঠানোর হার কমে এসেছে।