ব্রিটবাংলা রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পর যুক্তরাজ্য বিএনপি বেশ বেকায়দায় পড়েছে। বরাবরের মতোই শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য বিএনপি ৭দিন ব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেয়। কমনওয়েলথ নেতাদের সম্মেলন কেন্দ্র ওয়েষ্টমিনিষ্টার কুইন এলিজাবেথ হলের বাইরে প্রতিদিন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তারা। এজন্য প্রতিদিন ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা কর্মীরা জড়ো হয়েছিলেন লন্ডনে।
এবারের বিক্ষোভ প্রচারনায় যুক্তরাজ্য বিএনপি এলইডি ভিডিও ওয়াল ব্যবহার করে প্রচারণা করেছে। তবে শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের দিন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র হিন্দুদের দেবতা কৃষ্ণ ও রামের নাম ব্যবহার করা স্লোগান নিয়ে পড়েছে বিপাকে।
এই স্লোগানকে সাম্প্রদায়িক স্লোগান হিসাবে অভিযোগ করে সেকুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট ইউকে এবং সিপিআরএমবি নামের দুটি সংগঠন ইতিমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
এসবিএলএ ইউকে এর সভাপতি অজিত সাহা বলেন, গত ২১শে এপ্রিল যুক্তরাজ্য বিএনপির এমন হিন্দু ধর্ম অবমাননাকারী ধর্মীয় বিদ্বেষ ও ঘৃণাপূর্ণ স্লোগান বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিকে উস্কে দিতে পারে। এমন বিদ্বেষপূর্ণ স্লোগান সমাজে ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প বিস্তারে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সংগঠন দুটি দাবি জানিয়েছে ধর্মভিত্তিক স্লোগান ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাইলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন।
এদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক যুক্তরাজ্য থেকে সম্প্রচারিত এনটিভি’র সময়ের সাথে টকশোতে তাদের এই স্লোগান ধর্মবিদ্বেষী না বলতে গিয়ে বলেন, হরে কৃষ্ণ হরে রাম হচ্ছে ধন্য কৃষ্ণ, ধন্য রাম। এতে সনাতন ধর্মের লোকজনে খুশি হওয়ার কথা। এছাড়াও একই টকশোতে রাম ও কৃষ্ণকে ১ লক্ষ ২৪ হাজার পয়গম্বরের মধ্যে উল্লেখ করে মন্তব্য করে এই বিতর্ককে আবারো উস্কে দিলেন এম এ মালেক। শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সা: এর আগে যতো পয়গম্বর এসেছেন তাদের মধ্যে রাম ও কৃষ্ণ ছিলেন এবং মুসলমান হিসাবে তিনি তাদেরকেও নবী হিসাবে মানেন এমন বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যম সহ সব জায়গায়। এম এ মালেকের এই বক্তব্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই আঘাত পেয়েছেন। তারা এ বিষয়ে নানা ধরনের মন্তব্যও করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এম এ মালেককে ব্রিটবাংলা থেকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে যুক্তরাজ্য বিএনপির বেশ কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাম্প্রদায়িক মন্তব্য বা স্লোগান দেয়াটা ঠিক হয়নি। এইটা কয়েকজন অতি উতসাহী কর্মী’র কান্ড! এই নেতৃবৃন্দ এম এ মালেকের রাম ও কৃষ্ণকে পয়গম্বরের তালিকায় নিয়ে আসার মন্তব্য নিয়েও বেশ ক্ষুব্দ! তারা বলেন, এ ধরনের মন্তব্য দলের ভাবমূর্তির জন্য খুবই খারাপ। আমরা জামায়াতকে নিয়ে এমনিতেই বিপদে আছি। সেই সাথে এমন মন্তব্য আমাদের বিপাকে ফেলে দেয়।