বিশ্বব্যাপী অপরাধীচক্রের শত শত সদস্য এফবিআইয়ের ফাঁদে পা দিয়ে আটক

সংগঠিত অপরাধ-চক্রের বিরুদ্ধে ১৬টি দেশে চালানো এক নজিরবিহীন অভিযানে ৮০০-রও বেশি সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে নগদ প্রায় পাঁচ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ এবং কয়েক টন মাদকদ্রব্য।এই অপরাধ-চক্রকে ধরতে এক অভিনব কৌশল ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থা এফবিআই।তারা সন্দেহভাজন অপরাধীদের একটি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করতে আকৃষ্ট করে, এবং এর মাধ্যমে তাদের গোপন তৎপরতার তথ্য জানতে পারে। অভিনব এই স্টিং অপারেশনের নাম ছিল ‘অপারেশন ট্রোজান শিল্ড/গ্রিন-লাইট’।এতে যুক্ত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই এবং অস্ট্রেলিয়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা অ্যানম নামে একটি মেসেজিং অ্যাপকে কাজে লাগায় – যা এফবিআই নিজেই তৈরি করেছে। অভিযানে জব্দ করা অস্ত্র, মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ এবং দামী মোটর সাইকেল।বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা প্রচলিত কিছু মেসেজিং অ্যাপ বন্ধ করে দেয়ার ফলে অপরাধী চক্রগুলো নতুন এবং নিরাপদ ফোনের সন্ধানে ছিল। এরই সুযোগ নিয়ে এফবিআই তাদের গুপ্তচরদের মাধ্যমে অ্যানম অ্যাপটি ইন্সটল করা আছে এমন মোবাইল ফোন অপরাধীদের মধ্যে গোপনে ছড়িয়ে দেয়।

ফলে পুলিশ অপরাধীদের ফোনে কথোপকথন ও বার্তা বিনিময়ের ওপর নজরদারি করতে সক্ষম হয়। একশটি দেশে ৩০০ অপরাধ সিন্ডিকেট এরকম ১২,০০০ ডিভাইস ব্যবহার করছিল, যার সবগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ মেসেজ পুলিশ কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে দেখতে পাচ্ছিলেন।এতে জড়িত ছিলেন সারা বিশ্বের ৯,০০০ পুলিশ কর্মকর্তা। তারা জানতে পারেন কীভাবে অপরাধীরা মাদক ও অর্থ পাচার থেকে শুরু করে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে।ঐ অভিযানের লক্ষ্য যারা ছিল তাদের মধ্যে আছে মাদকপাচারকারী চক্র এবং মাফিয়ার সাথে যুক্ত লোকেরা। ষোলটি দেশে চালানো এ অভিযানে ৮০০-রও বেশি সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।নগদ প্রায় পাঁচ কোটি ডলার পরিমাণ অর্থ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সি, আট টন কোকেনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য, ২৫০টি বন্দুক, দামী গাড়ি ইত্যাদি।কর্মকর্তারা বলছেন, এটি অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ঘটনা।এই অভিযান শেষ হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, সারা বিশ্বের সংগঠিত অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে তারা এক বড় আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছেন। সূত্র: বিবিসি বাংলা

Advertisement