বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে উদ্ভাবনী এগ্রিকালচার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট

করোনাকালীন বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত সর্বোত্তম অনুশীলন এবং উদ্ভাবনী ডিজিটাল এগ্রিকালচার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জাতিসংঘের হাই-লেভেল পলিটিক্যাল ফোরাম অন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (এইচএলপিএফ) ২০২২-এর একটি উচ্চ-পর্যায়ের অনলাইন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অনলাইনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে তৈরি একটি টেকসই এগ্রিকালচারাল ইকোসিস্টেম খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাপনা এবং এর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাতের জন্য আরও অনেক সুবিধা বয়ে আনবে। তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্রাউডসোর্সিং, স্যাটেলাইট ডাটা এবং এগ্রিকালচার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডাটা সিস্টেম ব্যবহার করে একটি সার্বজনীন ফুড ডাটা সিস্টেম উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকার, উন্নয়ন অংশীদার, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন এবং তাদের উদ্ভাবিত সর্বোত্তম প্রযুক্তি, দক্ষতা ও অনুশীলন নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সকলের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সহজ নীতিমালা তৈরি ও তা কার্যকর করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে ক্রস-সেক্টরাল কোঅর্ডিনেশন এবং কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য একটি টেকসই লজিস্টিক সলিউশন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। ব্লকচেইনের মতো সর্বাধুনিক ফোরআইআর প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনাকালীন জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ভাবিত ডিজিটাল প্রযুক্তিগত সমাধানগুলোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আরও বৃহৎ পরিসরে টেকসই এগ্রিকালচার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে রূপান্তর করা যেতে পারে বলে মত দেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে আমাদের অনেক দেশে কৃষিই হলো প্রধান অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। তবে, মহামারির সময়টাতে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন অব্যাহত রাখতে অনেকগুলো ডিজিটাল উদ্ভাবনকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে কাজে লাগাতে হয়েছে। বৈশ্বিক ক্ষুধা মোকাবেলায়ও আমরা এ উদ্ভাবনগুলোকে কাজে লাগাতে পারি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজার জনাব আনীর চৌধুরী। সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন (এসএসএনফরপিএসআই)’র উপদেষ্টা তার উপস্থাপনায় কোভিড-১৯ চলাকালীন খাদ্য ও অন্যান্য শিল্পের জন্য বাংলাদেশে নেয়া বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ সম্পর্কে আলোকপাত করেন। সমাপনী বক্তব্যে সেনেগালে নিযুক্ত জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি চ্যাখ নিয়াং এবং ইউনাইটেড নেশন্স অফিস ফর সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন (ইউএনিএসএসসি)’র ডেপুটি ডিরেক্টর ফর প্রোগ্রাম অ্যান্ড অপারেশনস মিস জিয়াওজুন গ্রেস ওয়াং মহামারি পরবর্তী সময়ে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এগ্রিকালচার সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপর জোর দিয়েছেন।অন্যান্যদের মধ্যে, জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা এই অনলাইন অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, জাতিসংঘে সেনেগাল প্রজাতন্ত্রের স্থায়ী মিশন, ইউনাইটেড নেশন্স অফিস ফর সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন (ইউএনিএসএসসি), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন (এসএসএনপিএসআই) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতে সহযোগিতা করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), দ্য কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট, গ্লোবাল ইনোভেশন ফান্ড, এগ্রো সাপ্লাই লিমিটেড, বায়ার ক্রপসায়েন্স লিমিটেড এবং পাবলিক ডিজিটাল।

Advertisement