চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে রোগটিতে নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও চার লাখ ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।এ দিকে সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল যুক্তরাষ্ট্রে। অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুতে এরপরই রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন-মেক্সিকো এবং ব্রাজিলের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড শনাক্তের সংখ্যা ২৪ কোটি ২৭ লাখের ঘরে পৌঁছেছে। অন্য দিকে প্রাণহানির সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৯ লাখ ৩৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে।বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাত হাজার ৪৭২ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় প্রাণহানির সংখ্যা তিন শতাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যাও ৪৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৫ জনে পৌঁছে গেছে।নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৫০ হাজার ৪৫৫ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৯০৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ে দেশটিতে করোনার থাবায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৭৯ হাজার ১২৩ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ৯৯৮ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত চার কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার ৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন সাত লাখ ৫১ হাজার ৬৯২ জন।অপর দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়া। শেষ এক দিনে দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ২৮ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮০ লাখ ৯৪ হাজার ৮২৫ জনে পৌঁছেছে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ২৬ হাজার ৩৫৩ জন কোভিড রোগীর।
শেষ এক দিনে ব্রিটেনে নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৯ হাজার ১৩৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১৭৯ জনের। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮৫ লাখ ৮৯ হাজার ৭৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া মারা গেছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩১ জন।করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০১ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬১০ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ৪৮৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ছয় লাখ চার হাজার ৩০৩ জনের।
এ দিকে কোভিড আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। নির্ধারিত শেষ এক দিনে দেশটিতে করোনার থাবায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬০ জন। আর নতুন করে ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৩৫৯ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত তিন কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৬৮২ জন এবং প্রাণ গেছে চার লাখ ৫২ হাজার ৮৪৪ জনের।এছাড়া কোভিড সংক্রমিত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ১৬২ জন, ইউরোপের দেশ তুরস্কে ২১৪ জন এবং ইউক্রেনে ৪৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপর দিকে নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ গেছে ৪৪৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৯২৩ জনের।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।
