চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখ যোগ্য পরিমাণে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাত হাজারের অধিক মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে রোগটিতে নতুন করে প্রায় পৌনে দুই লাখ আক্রান্ত নিয়ে মোট রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ সাত হাজার ছাড়িয়ে গেছে।সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় এরপরই যথাক্রমে রয়েছে রাশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ইউক্রেন এবং ভিয়েতনামের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ কোটি ১৭ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫৩ লাখ ৩৬ হাজারে পৌঁছে গেছে।বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাত হাজার ২৬১ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা আড়াই হাজারের অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৮ জনে পৌঁছেছে।
নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ছয় লাখ সাত হাজার ৮৯৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ৬৮ হাজারের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৭ কোটি ১৭ লাখ আট হাজার ২০৭ জনে দাঁড়িয়েছে।এ দিকে গেল এক দিনে বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। একই সময়ে দেশটিতে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ আট হাজার ১০৭ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ৫৮৮ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৮৩ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আট লাখ ২১ হাজার ৩২৫ জন।অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়ার নাম। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৪৫ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ২৮ হাজার ৩৪৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে এক কোটি ৭৪ হাজার ৭৯৭ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৭৪৯ জনের।
গেল ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৬১০ জন। আর মারা গেছেন ১৫০ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত এক কোটি নয় লাখ ৩২ হাজার ৫৪৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন এক লাখ ৪৬ হাজার ৬২৭ জন। একই সময়ে ফ্রান্সে নতুন করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৪০৫ জন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫৮ জন।
এছাড়া ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৯৫ জন। আর মারা গেছেন ৫৭৫ জন। মহামারি করোনার তাণ্ডব শুরুর পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৫১১ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন এক লাখ সাত হাজার ১৬৬ জন। একই সময়ে ইউক্রেনে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন সাত হাজার ২৮৩ জন। আর মারা গেছেন ৩৮৭ জন।
করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। গত এক দিনে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪১ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন তিন হাজার ৮২৬ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ গেছে ছয় লাখ ১৭ হাজার ১২১ জনের।এ দিকে কোভিড আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন তিন কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার ৬৩০ জন। আর মারা গেছেন চার লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৮ জন।এছাড়া মহামারি করোনায় সংক্রমিত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৬৭ জন, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ১৮১ জন, পোল্যান্ডে ৫৩৭ জন, হাঙ্গেরিতে ১৯৫ জন, স্লোভাকিয়ায় ১০১ জন এবং ভিয়েতনামে ২৫২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অপর দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে মারা গেছেন ৪৯ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ৭২১ জনের।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।