চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে প্রাণ গেছে আট হাজারের বেশি লোকের। একই সময়ে ভাইরাসটির থাবায় নতুন করে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও চার লাখ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে।
সর্বশেষ এক দিনে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে। অন্য দিকে দৈনিক মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২০ কোটি ৭৯ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ছাড়াল।সোমবার (১৬ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন আট হাজার ৯৫ জন রোগী। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় এই মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশ হ্রাস পেয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮৯ জনে পৌঁছেছে।এছাড়া একই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন চার লাখ ৬৮ হাজার ৮৮৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ কমে গেছে। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটির থাবায় আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ কোটি ৭৯ লাখ ৮০ হাজার ৪১৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল ইরান। এই সময়ের মধ্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্রে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৭৩৬ জন ব্যক্তি। মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৪ লাখ ২৫ হাজার ৮২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৭ হাজার ৮২৮ জন।অপর দিকে গত এক দিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায়। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনার বিষাক্ত থাবায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ২২২ জন রোগী। এছাড়া নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ৮১৩ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৮ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৪ জন ছাড়িয়েছে। আর প্রাণহানি ঘটেছে এক লাখ ১৭ হাজার ৫৮৮ জনের।অবশ্য গেল ২৪ ঘণ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় সংক্রমণ অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে ভাইরাসটির থাবায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৮৩ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৭৪ লাখ ৬৬ হাজার ৭১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ছয় লাখ ৩৭ হাজার ৫৬১ জন।
এ দিকে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও প্রাণহানির সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮৫ জন। আর নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৫৭ জন। অপর দিকে মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি তিন লাখ ৬৪ হাজার ৯৯ জন ছাড়িয়েছে। আর পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার ২১৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান বর্তমানে তৃতীয়। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৪২১ জন। এছাড়া নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ হাজার ২২১ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তিন কোটি ২২ লাখ ২৫ হাজার ১৭৫ জন। আর মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৩১ হাজার ৬৭৪ জনের।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৪ লাখ ৭১ হাজার ৩৫ জন ফ্রান্সে, রাশিয়ায় ৬৬ লাখ ৮৩৬ জন, ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪৩৭ জন যুক্তরাজ্যে, ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৯ জন ইতালিতে, ইউরোপের মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬০ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫৩ জন, ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪০ জন স্পেনে, মেক্সিকোতে ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৯৭১ জন এবং জার্মানিতে ৩৮ লাখ ২৮ হাজার ২৬৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।অন্য দিকে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে এক লাখ ১২ হাজার ৬৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া রাশিয়ায় এক লাখ ৭০ হাজার ৪৯৯ জন, এক লাখ ৩০ হাজার ৯৫৩ জন যুক্তরাজ্যে, ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৪৩২ জন, আর ৫৩ হাজার ১৫৯ জন তুরস্কে, স্পেনে ৮২ হাজার ৪৭০ জন, এছাড়া ৯২ হাজার ৩৭৩ জন জার্মানিতে এবং মেক্সিকোতে দুই লাখ ৪৮ হাজার ১৬৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।