চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে সংক্রমিত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় অনেক বেশি বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে।সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। একই সঙ্গে দেশটি দৈনিক মৃত্যুতেও শীর্ষে উঠে এসেছে। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় সংক্রমিতদের সংখ্যা ২১ কোটি ৩৯ লাখের ঘর ছাড়িয়ে গেছে। অপর দিকে মৃতের সংখ্যাও ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার পৌঁছেছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজার ৪২০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় প্রাণহানি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রায় তিন হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যাও ৪৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯১৭ জনে পৌঁছে গেছে।এছাড়া নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৫১ হাজার ৫২৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ল দেড় লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে ভাইরাসটিতে নতুন আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৭ হাজার ৭৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে বিশ্বে দৈনিক আক্রান্তের পাশাপাশি দৈনিক মৃত্যুতেও শীর্ষে উঠে এলো যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৭ জন। আর মৃত্যুবরণ করেছেন এক হাজার ১৩০ জন। করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটিতে এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৮৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯৩ জন রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ছয় লাখ ৪৮ হাজার ১২৬ জন।অন্য দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৩৮ জন। এছাড়া নতুন করে করোনা ভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ১০৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ আট হাজার ১৬৬ জন। আর প্রাণ হারিয়েছেন এক লাখ ২৮ হাজার ২৫২ জন।করোনায় শনাক্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৮৫ জন। আর নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ১৪ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ছয় লাখ ১৫ হাজার আটজন। এছাড়া এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৮২৯ জনের।
করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যার তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি। গেল ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৩৭ জন। আর নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৫১ হাজার ১৬ জন। দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৩৭০ জন। আর মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৮ জনের।এ দিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে নতুন করে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪০ হাজার ৬২৩ জন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৭০৯ জন। মহামারি করোনা ভাইরাসের শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন এক লাখ ৩ হাজার ৩৫৭ জন।এছাড়া এখন পর্যন্ত ৬৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬৩০ জন ফ্রান্সে, আর রাশিয়ায় ৬৭ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭৪ জন, এছাড়া যুক্তরাজ্যে ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২০০ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫৭ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৬২ লাখ ৫৩ হাজার ৭১১ জন, জার্মানিতে ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ৪১৭ জন, স্পেনে ৪৮ লাখ চার হাজার ৪২৪ জন এবং ৩২ লাখ ৩১ হাজার ৬১৬ জন মেক্সিকোতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।অন্য দিকে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে এখন পর্যন্ত এক লাখ ১৩ হাজার ৫৭২ জন ফ্রান্সে, আর রাশিয়ায় এক লাখ ৭৭ হাজার ৬১৪ জন, এছাড়া যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৩১ হাজার ৮৫৪ জন, ইউরোপের দেশ ইতালিতে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৫৫ জন, মুসলিম রাষ্ট্র তুরস্কে ৫৪ হাজার ৯৯৫ জন, জার্মানিতে ৯২ হাজার ৫২২ জন, স্পেনে ৮৩ হাজার ৫২৭ জন এবং দুই লাখ ৫৩ হাজার ৫২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতিও ঘোষণা করেছিল।