বিয়ানীবাজার পিএইচজি উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ যুক্তরাজ্যের এক সংবাদ সম্মেলন

ছাত্ররা তাদের প্রিয় বিদ্যাপীঠের শতবর্ষ উদযাপন করবেন, এটি তাদের আবেগ এবং অধিকারও বটে।এই লক্ষ্যে যদি আলাদা আলাদাভাবে লন্ডন, মানচেস্টার, বার্মিংহামসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয় সেটি মোটেও বিভক্তির প্রকাশ নয় বরং এটি হওয়াই স্বাভাবিক।আমরা এ ধরণের প্রতিটি আয়োজনকেই স্বাগত জানাই-শাহাব উদ্দিন আহমদ বেলাল

আহাদ চৌধুরী বাবু: সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার একটিসমৃদ্ধ জনপদের নাম ৷ ব্রিটেনে বিয়ানীবাজার এলাকার বিপুল সংখ্যাক প্রবাসী দের অবস্থান ৷ এরা শুধু স্থানীয় কমিউনিটিতে নয় দেশের উন্নয়ন ও পাশা পাশি নিজেদের উপজেলার শিক্ষা সামাজিক এবং স্বাস্থ্য ও অবকাটামো নির্মানে অংশ গ্রহন প্রশংসনীয় ৷

অনেক ক্ষেত্রে দ্বিধা বিভক্তির প্রকাশ থাকলেও তারা পৃথক পৃথক ভাবে বড় বড় বিশাল কর্মসুচী পালন করে থাকে ৷ তারাই ধাবারাহি কতায় বুধবারপুর্ব লন্ডের একটি রেস্টুরেন্টে বিয়ানীবাজার পিএইচজি উচ্চ বিদ্যালয় শতবর্ষ উদযাপন পরিষদ যুক্তরাজ্যের এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব প্রবীন সাংবাদিক শাহাব উদ্দিন আহমদ বেলাল।

তিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন বিয়ানীবাজারের স্বনামখ্যত প্রতিষ্ঠান পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় চলতি বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে তার গৌরবময় পথচলার শতবর্ষ পর্দাপন করেছে।আমাদের সাহসী পূর্বপুরুষেরা বিয়ানীবাজারকে শিক্ষায়-দীক্ষায় বিশ্ব দরবারে সুউচ্চ আসনে আধিষ্ঠ করতে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তারই সফল পরিণতি পিএইজি হাই স্কুল।

বলতে দ্বিধা নেই, এই বিদ্যাপীঠ থেকেই সমৃদ্ধ বিয়ানীবাজারের স্বপ্নের পথচলা শুরু।


তিনি স্কুলের স্মৃতিচারন ও ইতিহাস তুলে বলেন, বিয়ানীবাজারের প্রখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান স্বর্গীয় পবিত্রনাথ দাস এই স্বপ্নের বীজ রোপন করেছিলেন।সঙ্গে তিনি পেয়েছিলেন একদল সুহৃদ স্বেচ্ছাসেবী।তাদের সেই সম্মিলিত স্বপ্ন পত্র-পল্লবে বেড়ে গিয়ে আজ শতবর্ষ পূর্ণ করেছে।গত একশ বছরে স্কুলটি একের পর এক প্রাপ্তির ইতিহাস রচনা করেছে।এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠ নিয়ে পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বাংলাদেশ তথা প্রবাসে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা অগণিত।
বিশ্বের যেখানে বিয়ানীবাজারবাসী রয়েছেন তারা সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন স্কুলটির স্মৃতি।যুক্তরাজ্যে অভিবাসী কমিউনিটির অর্জনের খাতায় বিয়ানীবাজারবাসীরও রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা।আর আমরা হিসেব করে দেখি, বিলেতে বিয়ানীবাজারবাসীর অর্জনে যারা এগিয়ে আছেন তারা অধিকাংশই একদিন পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ হাই স্কুল থেকেই নিয়েছেন জীবনের পাঠ।

স্কুলের যুক্তরাজ্য সাবেক শিক্ষার্থীরা শতবর্ষকে স্মরণ করে রাখতে উদ্যোগ নিয়েছেন পুনর্মিলনীর।

আগামী ৫ নভেম্বর, রবিবার বিকেলে পূর্ব লন্ডনের অট্রিয়াম হলে এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হবে।

যেখানে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বিপুলসংখ্যক বিয়ানীবাজারবাসীর বড় অংশই ছিলেন পঞ্চখন্ড- উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।বর্তমানে ব্রিটেনে এই স্কুলের ৪ থেকে ৫ হাজার সাবেক ছাত্র বাস করছেন।এত বিপুলসংখ্যক ছাত্রদের এক ছাতার নীচে নিয়ে আসা সহজসাধ্য নয়।ছাত্ররা তাদের প্রিয় বিদ্যাপীঠের শতবর্ষ উদযাপন করবেন, এটি তাদের আবেগ এবং অধিকারও বটে।

এই লক্ষ্যে যদি আলাদা আলাদাভাবে লন্ডন, মানচেস্টার, বার্মিংহামসহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয় সেটি মোটেও বিভক্তির প্রকাশ নয় বরং এটি হওয়াই স্বাভাবিক।আমরা এ ধরণের প্রতিটি আয়োজনকেই স্বাগত জানাই।

তিনি বলেন, আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি শতবর্ষ পূর্তি ও পুনর্মিলনী কমিটি ২০১৭ এর উদ্যোগে আগামী ৫ নভেম্বর অট্রিয়াম হলে যে পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছে।এতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে।এই পুনর্মিলনীর প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন শত শত সাবেক শিক্ষার্থী।সবাই একটি অনন্য-অসাধারণ আয়োজনের প্রত্যাশা করছেন।অন্যদিকে শতবর্ষ পূর্তি ও পুনর্মিলনী কমিটির সদস্যরা অনুষ্ঠানকে সফল করে তুলতে গত কয়েক মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।একের পর এক সভার মাধ্যমে তারা অনুষ্ঠানকে সফল ও স্বার্থক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।আমরা আশা করছি, সবার প্রত্যাশায়, সবার অংশগ্রহণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে পিএইজি হাই স্কুলের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব।

তিনি জানান ইতোমধ্যে আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে থাকছেন স্কুলের অগ্রযাত্রায় বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে জড়িত বিয়ানীবাজারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।এছাড়া উপস্থিত থাকবেন প্রখ্যাত সাংবাদিক-কলামিস্ট, অমর একুশে গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র, কাউন্সিলারসহ বিলেতের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গ।পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ, সম্মানিত অতিথিদের মূল্যবান বক্তব্যের পাশাপাশি থাকছে বিলেতের খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

তিনি এই আয়োজনে বিলেতের বাংলা মিডিয়ায় সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।সেই সাথে অনুষ্ঠানকে সুন্দর, সফল ও সর্বাত্মক সহযোগিতা, পরামর্শ এবং পুনর্মিলনীর সংবাদ প্রচারে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সমাপনি বক্তব্য রাখেন কমিটির আহবায়ক আলহাজ মনোজ্জির আলী।এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মোঃ জামাল উদ্দিন, ফয়জুল হক, বাবুল হোসেন, লুৎফুর রহমান সায়াদ, আফসার খান সাদেক বিলাল মোঃ টুনা, নজরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, অজি উদ্দিন প্রমুখ।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা ।উদযাপন পরিষদের আহবায়ক মোঃ মনোজ্জির আলী বলেন, পবিত্র নাথ দাস কেবল পিএইচজি উচ্চ বিদ্যালয় নয়, বিয়ানীবাজারের আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। বিয়ানীবাজার এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে তৎকালীন জমিদার পুত্র পবিত্র নাথ দাসের অবদান কখনো ভুলার নয়। এই উদযাপন কমিটি ভবিষ্যতেও টিকে থাকবে এবং বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাবে বলে জানান তিনি।
আহবায়ক মনোজ্জির আলী এবং সদস্য সচিব শাহাব উদ্দিন আহমদ বেলাল পুরো আয়োজনে অগ্রণী ভূমিকা রাখার জন্য বাবুল হোসেনকে ধন্যবাদ জানান।
বাবুল হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, পবিত্র নাথ দাসের মত যারা সমাজে উদারতা ও মহানুভবতার বলিষ্ঠ অবদান রেখে যাবে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের কথা স্মরণ রাখবে। তিনি বলেন, মোঃ মনোজ্জির আলী পিএইচজি বিদ্যালয়ের একটি ভবন তৈরি করে দিয়েছেন। আর শাহাব উদ্দিন আহমদের বাবা দীর্ঘ ৪৫ বছর পিএইচজি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। এই দুজনের নেতৃত্বে পিএইচজি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পুর্তি উদযাপন ৷ আর এই প্রক্রিয়া শুরুর প্রচেষ্টা ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে সকল গনমাধ্যমকে অবহিত করি যার ধারাবাহি কতায় আগামীর অনুষ্ঠান৷
এ উপলক্ষ্যে একটি স্মারক ম্যাগাজিন প্রকাশিত হবে।

Advertisement